সমস্ত লেখাগুলি

খালিস্থানী অর্থোডক্স শিখ মৌলবাদী -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Dec. 3, 2024 | সামাজিক ইস্যু | views:507 | likes:2 | share: 2 | comments:0

স্বাধীনতার আগেও বহু সমস্যা ছিল। স্বাধীনতার পরেও বহু সমস্যা আছে এটা আমরা সবাই জানি! এ আবার নতুন কি? কিন্ত বর্তমানে যে ধরণের সমস্যা আমরা আজকে দেখছি তা এক দিনের সমস্যা নয়, বহু দিনের সমস্যা। সেই সব সমস্যার মধ্যে একটি অন্যতম ছিল শিখ’দের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র, আলাদা সংবিধান গঠন। সালটা ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে মুসলিম লীগ যখন মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবী জানায়, তখন কিছু শিখ নেতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যে হিন্দু ও মুসলিমের ভিত্তিতে ভারত বিভাজিত করলে শিখ সম্প্রদায়ের কোন স্বাধীন মাতৃভূমি থাকবে না। তারা তখন বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চলে বিস্তৃত খালিস্তান নামক একটি ধর্মরাষ্ট্র সৃষ্টির ধারণা পেশ করেন। এই কথা আমরা অনেকেই জানি, কিন্ত এই শিখ রাষ্ট্র বা খালিস্থান কি স্বাধীনতার আগে বা পরের আলোচনা? উত্তর হলো, না। পাঞ্জাব অঞ্চল শিখদের ঐতিহ্যগত মাতৃভূমি। এই কথা সবাই জানি এবং ইংরেজ দ্বারা অধিকৃত হবার আগে পাঞ্জাব শিখদের দ্বারা ৮২ বছর শাসিত হয়, যা ১৭৬৭ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র পাঞ্জাব শিখ মিসল (সার্বভৌম শিখ রাষ্ট্র) সমূহের অধীন ছিল, তারপর মহারাজা রণজিৎ সিং শিখ মৈত্রী সঙ্ঘকে শিখ সাম্রাজ্যের মাঝে একীভূত করেন। তবে সেখানে শিখদের পাশাপাশি অনেক হিন্দু ও মুসলিমও বসবাস করত, তারপরেও ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাস আমরা জানি...


শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দাবী করেন যে শিখরা বরাবরই একটি পৃথক ও সার্বভৌম জাতি ছিল এবং দক্ষিণ এশিয়ার শিখ অধ্যুষিত এলাকাগুলো দ্বিতীয় ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হবার পূর্ব পর্যন্ত বহু শতাব্দী ধরে স্বাধীন ছিল। যা ১৮৪৮-১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত এ যুদ্ধের ফলে শিখ সাম্রাজ্য ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনস্থ হয়, পাঞ্জাব অঞ্চল কোম্পানি শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তা পরবর্তীতে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে পরিণত হয়। অনেক শিখ বিশ্বাস করেন যে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের সময়, হিন্দু-মুসলিমদের পাশাপাশি শিখদেরকেও একটি পূর্ণ সার্বভৌম অথবা পাকিস্তানের অধীনে একটি অর্ধ সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারণে যা থেকে শিখরা বঞ্চিত হয় এবং পাঞ্জাব রাজ্য ভারত-পাকিস্তানের মাঝে বিভাজিত হয়। কিন্ত 1948 সেই সময় অনেকেই আলাদা ব্যবস্থা চেয়েছিল। তাদের মধ্যে জিন্নাহ, ড: ভিড় সিং, আম্বেদকর তারা এক ভারত চায়নি। যেমন আম্বেদকর মনে করতেন ব্রিটিশদের জন্য দেশের নিম্ন শ্রেণীর মানুষের উন্নতি হবে। সবার আলাদা পৃথক চিন্তাকে সেই সময় কংগ্রেস সরকার মানেনি তারা বলেছে ভারত আর ধর্মের ভিত্তিতে আর ভাগ হবে না। 

এর পরের যে সব ইতিহাস ঘটেছে, পাঞ্জাবী সুবাহ - ভাষা সমস্যা, নদী জলের বিতর্ক, হরমন্দির সাহেবে ১৯৫৫ সালের হামলা, অকালি দলের দাবী, খালিস্তান জাতীয় পরিষদ, ব্লু-স্টার অভিযান, ইন্দিরা গান্ধীকে গুপ্তহত্যা ও শিখদের গণহত্যা, জঙ্গিবাদের উত্থান, খালিস্তানী জঙ্গি গোষ্ঠী, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৮২ ইত্যাদি। তার পরেও ইতিহাস ১৯৯৫ সালের গুপ্তহত্যা; যাতে পাঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বেয়ান্ত সিংহের হত্যা করা হয়েছিল। মানে এই উপরের যতগুলো বিষয় আছে তা নিয়ে লিখলে একটি হাজার পাতার বই লেখার সমান হবে। এতোটা বিরক্ত এই খালিস্থান শিখ মৌলবাদ সমস্যা। এর মধ্যে রাজনৈতিক অরাজনৈতিক ধর্মীয় আলোচনা আছেই তার সাথে সেই সময়কার পত্রিকাগুলিও ভূমিকা আছে অনেক, এইসব আলোচনা অন্য সময় করলেই ভালো আলোচনা বিষয় অনেক বড়ো ছোট ছোট আলোচনাই ভালো তবে বর্তমানে যে ঘটনা এই কিছুদিন ঘটলো সেই বিষয় একটু আমরা নজর রাখার চেষ্টা করবো...

সাল 1984 দিল্লি যখন সাম্প্রদায়িকতার স্রোতে ভেসে চলেছে। এক দিকে শিখ গণহত্যা চলছে। কংগ্রেস কর্মীদের দ্বারা এই অভিযোগ তো আছেই কতটা সত্য জানা নেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। Bhindranwale মতো ব্যক্তিদের ব্লু স্টার অভিযান এর মাধ্যমে শেষ করা হয়েছে। সেই সময়ের শিখদের ধর্মীয় হরমন্দির সাহিব ব্লু স্টার অভিযান এর জন্য অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে শিখ'রা খিপ্ত হয়ে পরে। তারপর ভারতের ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধীর দুই শিখ দেহরক্ষী সৎবন্ত সিংহ ও বিয়ন্ত সিংহ অপারেশন ব্লু স্টার চলাকালীন “স্বর্ণমন্দির” নামে পরিচিত শিখদের সর্বোচ্চ তীর্থ হরমন্দির সাহিবে সেনা অভিযানের প্রতিশোধকল্পে তাকে হত্যা করে। তারপর অনেক বছর কেটে যায়। শিখ মৌলবাদ কিছুটা কমে গেলেও শেষ হয় না। বহু বছর পর বছর 30শের অর্থোডক্স শিখ Amritpal সে Bhindranwale এর যায়গা নেওয়ার চেষ্টায় আছে। মজার বিষয় সে এমনটা আগে ছিল না। তার কর্ম কান্ড আমরা কৃষক আন্দোলনে দেখতে পাই সে মাত্র 10 ক্লাস পড়াশোনা করে। ইস্কুল ছেড়ে দেয়। তারপর সেই বিদেশে চলে যায়। টাকা রোজগারের জন্য পারিবারিক অবস্থান ও খুব একটা ভালো ছিল না! Amritpal এর তবে বিদেশে থাকার পর কিছু টা ঠিক হয়। সে দেশে ফিরে এসে অমৃত চাক নামক অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে নিহঙ্ক হন এবং অনেক শিখ দের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে...


এর মাঝে তার নাম ডাক হতে থাকে যুব সমাজে সে বলতে থাকে প্রতিটা শিখ যুবক এর হিরো Jarnail Singh Bhindranwale এবং Amritpal জনসাধারণ কে বলতে থাকে যে তার উদ্দেশ্য Bhindranwale এর মতাদর্শ প্রচার করা। সে অনেক শিখদের হুমকি দিতে থাকে যে সব শিখরা দাড়ি রাখে না, মদ পান করে তাদের ছেড়ে কথা বলা হবে না। ঠিক এমন কথা তথা কর্মকান্ড Jarnail Singh করতো এবং নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে যে Jarnail Singh কিভাবে হিন্দুদের হত্যা কথা বলতো যে শিখ আর হিন্দুদের মাঝে ব্যালেন্স রাখতে হবে, তাদের হত্যা করে। এতে শিখ হিন্দুদের মধ্যে অবশ্যই সংঘর্ষ হবে। এবং অনেক খালিস্থানী মৌলবাদীরা Rss, কংগ্রেস, কমিউনিস্ট নেতাদেরও তারা হত্যা করেছে। যারা খালিস্থান এর বিরুদ্ধে কাজ করছিল। এবং সব থেকে বড় ঘটনা হলো পাঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বেয়ান্ত সিংহের হত্যা। এর পর অনেক খালিস্থানী লিডারদের কর্ম কান্ড বিদেশে নিজের শক্তিশালী করা সব রকম ভাবে 1980 আগে যেমন খালিস্থান লিডার রা যেমন লাহোর থেকে কাজ করত বর্তমানে খালিস্থান লিডাররা বিদেশ থেকে সেইসব দেশের মধ্যে সবার উপর কানাডা, জার্মানি, লন্ডন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া দেশ গুলি আগে আছে।  


তবে এই কিছু মাসে Amritpal এর যথেষ্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবেও শক্তিশালী হয়েছে। পাঞ্জাব যুব-সমাজেয একটি অংশ অর্থোডক্স শিখ মৌলবাদী Amritpal এর দিকে যাচ্ছে। এই কিছুদিন আগের ঘটনা আমাদের Jarnail Singh এর ঠিক শুরুর দিকের কথা মনে করিয়ে দেয়। ভারতের বুকে শিখ মৌলবাদ হিন্দুত্ব মৌলবাদ ইসলামিক মৌলবাদ এবং আঞ্চলিক মৌলবাদ একটি বাস্তব সমস্যা যা আমাদের দেশের জন্য তথা সাধারণ মানুষের জন্য একটি খারাপ স্বপ্নের মতো আসলে এই ভারতীয় উপমহাদেশে অর্থোডক্স শিখ হিন্দু মুসলিম বুদ্ধিষ্ট মৌলবাদ সন্ত্রাসবাদ বিশ্বাসের ভাইরাস নিজের বিস্তার করে চলেছে। আমরা দেখেছি কৃষক আন্দোলনে অর্থোডক্স শিখ কি ভাবে একজন ব্যক্তি অছুত দলিত হবার জন্য তার হাত পা কেটে নেওয়া আমরা দেখেছি একজন পুলিশ' ট্রাফিক আইন ভাঙার অপরাধে জরিমানা করাতে এক নিহঙ্গ পুলিশ এর হাত কেটে দিয়েছিল। আসলে শিখ ধর্ম নিয়ে আমি যতটা পড়াশোনা করেছি এবং বুঝেছি। এই ধর্মের ভালো দিকটা বেশি থাকলেও অল্প খারাপ দিয়ে সব টাই খারাপে পরিবর্তন করা যেতে পারে। এই অর্থোডক্স ধর্মান্ধ মানুষ গুলিই সমাজে ধর্মীয় ভেদাভেদ সৃষ্টি করে রেখেছে। নিজেদের খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে। আসলে Amritpal ভালো করে জানে টাকা ক্ষমতা ভারতে ধর্মের মাধ্যমে আসে এবং একটি সময় এটা চরম সাম্প্রদায়িকতার রূপ নেয়....

তথ্যসূত্র 

1 | https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE

2 | https://books.google.co.in/books?id=XJzUzWDwZ4kC&pg=PA218&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false

3 | https://www.gpo.gov/fdsys/pkg/CREC-1998-10-15/pdf/CREC-1998-10-15-pt1-PgE2197.pdf

4 | https://www.panthic.org/articles/5548

5 | https://theprint.in/opinion/ambedkar-changed-on-separate-communal-electorate-his-shift-was-strategic-not-voluntary/638904/

6 | https://clpr.org.in/blog/b-r-ambedkars-idea-of-separate-settlements/

7 | https://theprint.in/politics/the-former-punjab-chief-minister-who-fought-terror-and-loved-tea/109194/

8 | https://upscwithnikhil.com/article/history/assassination-of-indira-gandhi

 9 | https://m.thewire.in/article/rights/1984-sikh-massacre-remembrance/amp#amp_tf=From%20%251%24s&aoh=16774909179501&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com

10 | https://www.ojp.gov/ncjrs/virtual-library/abstracts/sikh-terrorism-struggle-khalistan

11 | https://www.mha.gov.in/MHA1/Par2017/pdfs/par2013-pdfs/ls-050313/LSQ.1192.Eng.pdf

12 | https://www.ndtv.com/people/bhindranwale-2-0-radical-preacher-and-khalistan-sympathiser-amritpal-singh-very-active-in-punjab-3810442

13 | https://indiankanoon.org/search/?formInput=khalistan

শিব রাত্রি পালন করা নারী জাতির কলঙ্ক নয় কি? -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 27, 2024 | ধর্ম | views:1023 | likes:11 | share: 6 | comments:1

নারীরা এতো ভক্তি সহকারে এতো নিষ্ঠা ও উন্মাদনার সাথে যে শিব-রাত্রি পালন করে, তার ইতিহাসটা কি তারা জানে? আমার দৃঢ় বিশ্বাস তারা যদি শাস্ত্রগ্রন্থগুলি পড়ত বা জানত তাহলে এতো অশ্লীল-অসভ্য-বর্বর কর্মটি তারা কিছুতেই করতে পারত না। যে সব নারীরা শিব পূজা বা শিবরাত্রি পালন করে তাদের উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য, আগে ধর্মশাস্ত্রগুলি পাঠ করুন, তারপর যদি রুচিতে বা সম্মানে না লাগে তবে শিবরাত্রি পালন করুন।

এবার জানুন শাস্ত্রগ্রন্থগুলিতে শিবের চরিত্র সম্পর্কে বা শিবরাত্রি পালন সম্পর্কে কি ইতিহাস আছে----- শিবের চরিত্র সম্পর্কে বিভিন্ন পুরাণ গ্রন্থে বিভিন্ন রকম বর্ননা থাকলেও কাহিনী বা ঘটনা ধারা মোটামুটি প্রায় একই রকম।

শিব সম্পর্কে বর্ননা পাই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, মার্কন্ডেয় পুরাণ, গড়ুর পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ, নারদ সংহিতা, শিব উপাখ্যান, শিবায়ন ---- মূলত এই কয়েকটি গ্রন্থে।

এই গ্রন্থগুলিতে যেরকম বর্ণনা পাই তা হল, শিব অত্যন্ত কামুক, দুশ্চরিত্র, ব্যভিচারি, নেশাগ্রস্থ, অপরিচ্ছন্ন, বিকৃতি রুচির। সর্বদা গাজায় আসক্ত থাকে।

দিনের বেলায় "কুচনি" নামক বেশ্যা পল্লীতে সে পড়ে থাকে। তার দশ সহস্রাধিক উপপত্নী রয়েছে।

এই নিয়ে তার সর্বক্ষনের গৃহবিবাদ। সন্ধ্যার পরে চিতার ছাই মাখিয়ে, গাজায় টান মেরে শ্মশানে পড়ে থাকে।

অধিকাংশ রাতেই বাড়ি ফেরে না। কখনো কখনো মৃতের পচাগলা মাংস ভক্ষন করে।

পোশাক বলতে দিনের বেলায় শুধু কোমরে বাঘের ছালটুকু,আর রাতে উন্মাদ -- বস্ত্রহীন।

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে শিবলিঙ্গ পূজা বা শিবরাত্রি পালন সম্পর্কে যে কাহিনী পাই তা এতোটাই অশ্লীল-কদর্য, যা বর্ননারও অযোগ্য। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর "উপনিষদের ভাষ্য" গ্রন্থে এই বর্ণনা সম্পর্কে বলেছেন - "ইহা রতিশাস্ত্রকেও হার মানাইয়া দেয়, - এতটাই কুরুচিসম্পন্ন" (পাতা- ৯৬, পঞ্চম সংস্করন)।

অতি সংক্ষেপে কাহিনীটি হলো -"কামাতুর শিবের কামনার আগুন থেকে সতীত্ব-নারীত্ব বাঁচাতে সমস্ত নারীরা স্বর্গ ছেড়ে পালাতে থাকে। দিন-ক্ষণ নেই, নেই স্থান-কাল-পাত্রীর বিবেচনা। শিবের সম্মুখে পড়লেই তাদের রক্ষে নেই।

এমতাবস্থায় নিরুপায় হয়ে সমস্ত নারীরা ব্রহ্মার কাছে গেল। ব্রহ্মা তাদের কোনও পরামর্শ না দিতে পেরে বিষ্ণুর কাছে পাঠিয়ে দেয়।

অবশেষে বিষ্ণুর কাছে গেলে তিনি নারীদের পরামর্শ দিয়ে বলে, যখন শিব তাদের নারীত্ব হনন করবে তখন শিবের লিঙ্গ ছেদ করে দিতে হবে এবং ঐ ছেদ করা লিঙ্গকে বেলপাতা দিয়ে ঢেকে রেখে শান্ত করবে ----- তবেই শিবের কামনাকে দমন করা যাবে।

বিষ্ণুর কথামতো নারীরা একদিন অতি সুকৌশলে ও গোপনে শিবের লিঙ্গ (যৌনাঙ্গ) কেটে নেয়। কিন্তু কিছুতেই শিব লিঙ্গকে শান্ত করা যাচ্ছে না।

এমতাবস্থায় নারীরা পুনরায় বিষ্ণুর কাছে গেলে সে পরামর্শ দিয়ে বলে যে, এই কাটা লিঙ্গ শীল-নড়া দিয়ে থেঁতলে বেলপাতা দিয়ে চাপা দিতে হবে।

এভাবে অবশেষে শিবলিঙ্গ শান্ত হয় এবং শীল-নড়া দিয়ে থেঁতলে দেওয়ার ফলে শুধু বীর্য-দ্বার টুকু অক্ষত থাকে " (সূত্র -- ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, দেবদেবীর জন্মবৃত্তান্ত খন্ড, চতুর্থ সংস্করন, গীতা প্রেস, পাতা- ১৫৮ থেকে ১৬২, ১৬৬ থেকে ১৭২, ১৭৪)। পরবর্তীকালে শিবের এই বীর্য-দ্বারের পূজা করা হয়।

মার্কন্ডেয় পুরানের মৎস খন্ডে শিব সম্পর্কে আমরা জানতে পারি ---" পাঁচ-ছয় দিবস শঙ্কর বাড়িতে না ফিরলে উমা কুচনি পাড়ার পতিতালয় হইতে লোক দিয়া ধরিয়া আনিবার আজ্ঞা দিতেন "(ষষ্ঠ সংস্করন, সত্যম পাবলিকেশন্স, পাতা- ২১৮)। "শিবায়ন" গ্রন্থে মাতাল শিবের একটি চমৎকার বর্ণনা পাই - "গাজার নেশায় শিবের দু'চোখ ঢুলুঢুলু, দু'পা টলছে, সারা গায়ে ছাইভস্ম মাখানো, শ্মশান থেকে পথ চিনে আসতে পারছে না, পাড়া প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢুকে পড়ছে।

অবশেষে প্রায় ভোর রাতে বাড়ি ফিরে স্ত্রী উমার পা ধরে মা মা বলে কাঁদতে শুরু করে "(বাংলায় অনুবাদ - দ্বিজ মাধব, দ্বিতীয় সংস্করন, পাতা- ৬১)। বিষ্ণুপুরাণের দক্ষযজ্ঞ পর্বে শিবের সঙ্গে সতীর বিয়ের সময়ের একটি মজার বর্ণনা পাওয়া যায়, তাহলো - শিব বিয়ে করতে গিয়েছে।

কোমরে শুধু বাঘের ছাল, আর বেল্ট হিসেবে জড়ানো রয়েছে সাপ। শিব বিয়ের পিড়িতে বসলে শালিকারা মজা করার জন্য সাপের মাথায় গাছড়া ধরলে সাপ শিবের কোমর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

সঙ্গে সঙ্গে শিবের কোমর থেকে বাঘের ছাল পড়ে যায়। আর কি, শাশুড়ির সামনে ল্যাংটো শিব।

শিব সম্পর্কে এই হলো ধর্মগ্রন্থগুলির বর্ণনা। যে সব নারীরা শিবরাত্রি পালন করেন বা শিবলিঙ্গ পূজা করেন এবার তাদের কাছে আমার প্রশ্ন - আপনারা কি শিবের মতো পুরুষ স্বামী হিসেবে পেতে চান? আসলে ব্রাহ্মন্যবাদী সিস্টেমে আপনারা ব্রাহ্মন্যবাদের ক্রীতদাসী হয়ে বেঁচে আছেন।

তাই ভালো মন্দকিছু বিচার না করে, ইতিহাস না জেনে, শুধু অন্ধভক্তিতে ডুবে আছেন - সেখানে যুক্তি-তর্ক, বিদ্যা-বুদ্ধি সব অচল।

তাইbতো অশিক্ষিতা থেকে শুরু করে B.A., M.A. পড়া মেয়েরা, স্কুল-কলেজের শিক্ষিকা, ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ মেয়েরাও এই অন্ধ কুসংস্কারে ও অন্ধ ভক্তি বিশ্বাসে মেতে আছেন। এর বাইরে কিছু ভাবতেই চায় না তারা।

শিবরাত্রি পালন করব, অথচ স্বামী মদ-গাঁজা খেলে দুশ্চরিত্র - লম্পট হলে এতো রাগ-অশান্তি করা হয় কেন? আর এই ইতিহাস জানার পরেও যদি কোনও মেয়ে শিবরাত্রি পালন করে, তবে আত্মমর্যাদাহীন, জ্ঞান-বুদ্ধিহীন, অন্ধ কুসংস্কারগ্রস্থ নারী বলা উচিৎ নয় কি? পাথরের শিবলিঙ্গে হাজার হাজার বালতি দুধ না ঢেলে ঐ দুধ ক্ষুধার্ত শিশুকে খাওয়ানো অনেক অনেক ভালো কাজ নয় কি? হে নারী জবাব দাও।

শ্রীমদ্ভাগবতে জাতিভেদের শাস্ত্রকথা -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 26, 2024 | ধর্ম | views:282 | likes:2 | share: 2 | comments:0

আমরা সবাই এতোদিন জানতাম যে শূদ্রদের সনাতন ধর্মে অসম্মান তথা পিরিত করেছে, যেটা চোখ বন্ধ করেও হলে সত্য, কিন্তু আজ এক নতুন তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরবো যা সনাতনী ক্ষত্রিয় বলা ব্যক্তিগণদের একবার চিন্তা করা উচিত তারা কতটা সম্মান পেয়েছে এই সনাতন ব্রাহ্মণ্য ধর্ম থেকে? আপনারা সবাই বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার। পরশুরাম, সম্পর্কে অবগত [পরশুরাম একুশবার পৃথিবী থেকে ক্ষত্রিয়শূন্য করেন] এই কথা আমরা সবাই জানি পৌরাণিক গল্প মতে খুব বিখ্যাত কিন্ত এখান থেকেই যুক্তিবাদীদের প্রশ্ন উঠে? প্রথমবার যদি পৃথিবী থেকে ক্ষত্রিয়শূন্য হয়ে থাকে! তাহলে আবার কীভাবে পরশুরাম আরও বিশবার ক্ষত্রিয়শূন্য করেছিলেন? এখন যদি বলেন সেই কালে বর্ণ ব্যবস্থা জন্ম থেকে নয় কর্ম থেকে তা হলে বলবো! বর্ণ ব্যবস্থা কোনওদিন কর্ম থেকে হতে পারে না। [ গীতা - 1:43, 18:41, 4:13, 18:42, 18:43, 18:44, 18:47, 18:48, 3:35 ] আপনার যদি সনাতন ধর্ম বিষয় একাডেমিক পড়াশোনা থাকে তাহলে এতোগুলি রেফারেন্স পর পর পাশে রেখে পড়েন তাহলে বুঝবেন আমি কী বলতে চাইছি। তবে ব্রাহ্মণ্যবাদের নোংরা চিন্তার জন্য ক্ষত্রিয়রা কোনও দিন ব্রাহ্মণ্যবাদকে মেনে না নেওয়ায় জন্য পরশুরামের সৃষ্টি এবং ক্ষত্রিয় বংশকে ধ্বংস, যেখানে পরশুরাম ক্ষত্রিয়দের হত্যা করেছে, সেখানে আরেক (রাম ) নিরপরাধ শূদ্র শম্বুক হত্যা এর পরেও সনাতন ধর্ম নাকি মহান যখন যখন ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে ক্ষত্রিয় শূদ্ররা প্রতিবাদ করেছে, ততবার বিষ্ণুর ভিন্ন অবতার নিয়ে দমন হত্যালীলা চালিয়ে গেছে, আর সেই শাস্ত্র ক্ষত্রিয়দের কুকুর বলে মনে করে।

 

আপনারা জানেন ক্ষত্রিয়রা খুব ধর্মপ্রাণ হয়ে থাকে ধর্মের জন্য সংস্কৃতির জন্য। নিজেদের জীবন দিতে তৈরি থাকে। তার সঙ্গে ক্ষত্রিয়দের দ্বিজ শাস্ত্র পড়ার অধিকার জন্মগত আছে। কিন্ত সেই সনাতন শাস্ত্র পড়তে পড়তে, শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ পড়লাম, এবং পায়ের নিচে মাটি সরে যাচ্ছে।


[শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ/ ১ম স্কন্ধ/ ১৮ অধ্যায় ৩২-৩৪ ]

“ব্রাহ্মণেরা ক্ষত্রিয়গণকে দ্বারপাল কুকুর বলিয়াই মনে করেন, তাহারা দ্বারদেশে অবস্থান করিবে, তাহারা কী রূপে আশ্রমে প্রবেশ করিয়া পাত্রস্থ অন্নভোজনের যোগ্য হয়?”


[ শ্রীমদ্ভাগবতের ৪ ম স্কন্ধের ৪ম অধ্যায় ৭ ]

ইশ্বর নিন্দাবাদীর জিহ্বাকে কেটে হত্যার জন্য আদেশ দিচ্ছে।


[শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ ১ম স্কন্ধ, ১৩ অধ্যায় ১৫-২৩ ]

শূদ্রের ধর্মোপদেশ দেওয়াকে বিরূপ দৃষ্টিতে দেখা হত। তাই বিদুরের ক্ষেত্রে জাস্টিফিকেশন দিতে হয়েছে।


[ শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ ১ম স্কন্ধ, ৫ম অধ্যায় ১৭-১৮]

“যদি কোনও ভক্ত স্বীয় বর্ণ ও আশ্রমের অনুষ্ঠেয় ধর্ম পরিত্যাগ পূর্বক শ্রীহরির চরণাম্বুজের ভজনা করিত করিতে ভক্তির অপক্ব অবস্থাতেই তাহা হইতে বিচ্যুত হন, তথাপি তাহার নীচ যোনিতে জন্মাদির আশঙ্কা নাই।” প্রশ্নঃ নীচ যোনি কোনগুলো? শূদ্র কি নীচ যোনি?


[ শ্রীমদ্ভাগবতের ১ম স্কন্ধের ৫ম অধ্যায় ২৩ ]

দেখা যায়, নারদ একবার এক ব্রাহ্মণের দাসীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দাসীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করাকে নেগেটিভ ভাবে দেখা হয়েছে বলে মনে হল।


[ শ্রীমদ্ভাগবতের ১ম স্কন্ধের ৭ম অধ্যায় ১৬-১৮,৩৩-৪৮ ]

কৃষ্ণ বিষ্ণুর রূপ ধরে অর্জুনকে বলেন, “ ব্রাহ্মণ অধম হলেও অবধ্য”। এই অধ্যায়ে দেখা যায় অশ্বত্থামা অনেক অপরাধ করলেও তাকে শেষমেষ হত্যা করা হয় না। এই সময় যুক্তি দেওয়া হয়-সর্বস্ব গ্রহণ ও মস্তকমুণ্ডন করে দেশ থেকে নির্বাসিত করে দিলেই অধম ব্রাহ্মণের বধ তুল্য শাস্তি হইয়া থাকে। এইরূপ ব্রাহ্মণের প্রাণদণ্ড শাস্ত্রে বিহিত হয় নাই।


এর পরেও লোকে বলে যে শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ নাকি একটি মহান পুরাণ কিন্ত এই পুরাণ কতটা মহান তা এই পুরাণ পড়লে পরে বোঝা যায়। 

বাংলাদেশের বর্তমান সাম্প্রদায়িক ঘটনা নিয়ে জেগে স্বপ্ন দেখা.. -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 25, 2024 | সামাজিক ইস্যু | views:282 | likes:2 | share: 2 | comments:0

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে কারা পোস্ট করছেন। আর লিখছেন? এপারে RSS-ওপারে জামাত....! বলছিলাম এই কথা শুনলে বাংলাদেশের পিনাকী ভট্টাচার্য ও নয়ন চ্যাটার্জী’রাও হাসবে তারা তো ‘জামাতপন্থী বুদ্ধিজীবী’। আসল কথা আপনারা যে জামাত এর কথা বলছেন সেটা আসলে ভারতেরই জামাত...।

[1] সময় করে ফতোয়া আলগিড়ি পড়লে জানতে পারবেন। [2] আপনাদের গণতন্ত্র ও সেকুলারিজমকে তারা কী বলে। তাদের ভাষায় আল-তাকিয়া বলে। এরপর আর কিছু বলার বাকি আছে? [3] যাইহোক এই বিষয় [আব্দুল্লাহ-আল-মাসুদ] ভালোই অবগত, তবে বাংলাদেশে জামাত শিবির আর নেই! এখন সবটাই রাজনীতি[4] এখন যেটা আছে সেটা হলো হেফাজত ইসলাম। [5]  


বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হামলার পেছনে, হেফাজত বা আপনাদের জামাত এর কোনও হাত নেই। ওটা আপনাদের মানসিক অসুস্থতার একটি বাহির চিত্র মাত্র...! তাদের বিনা কারণ ছাড়াই দোষ দিচ্ছেন। এখন যদি বলেন এই কথার তথ্য কি? তার খুব সুন্দর উত্তর আছে। কিছুদিন আগে মুসলিম ছেলের প্রেমে প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় এক হিন্দুমেয়ে নামে ফেক ফেসবুক ধর্মীয় কটূক্তির পোস্ট করে মিথ্যা অভিযোগে হিন্দু মেয়েটিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্ত এটা শেষ নয় এর তারপর শুরু হয় থানায় হামলা, আক্রমণ, CA land, uno, সার্কেল পুলিশ সুপারের গাড়ী ভাংচুর, তার সাথে থানাও ভাংচুর বুঝতেই পারছেন কতটা অনুভূতি।[6] ভিডিও দেখে মনে হল বাংলাদেশ পুলিশ কেমন তৎপর! এবং এইসব ঘটনা বছরে অনেক ঘটে তার তথ্য [7] বাংলাদেশের চিড়িয়া তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আসলে বাংলাদেশ একটি এখন চিড়িয়াখানা। আওমলীগ ভয় দেখায়। তারা না থাকলে বিএনপি জামাত চলে আসলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা আবার ভারতের মত সংখ্যালঘু রাজনীতি করে না। যেমনটা ভারতে হয়। ওই তো আর কি জনসংখ্যা 90% তো মুসলিম এক কথায় মুসলিম রাষ্ট্র তবে ইসলামিক রাষ্ট্র নয়। [8]


বাংলাদেশে এই মাস খানেক আগে একজন শিক্ষককে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পুলিশের সামনে কি করা হল তা বলার মতো না। [9] বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন করতে চাইলে জামাত হেফাজত এদের কারোর দরকার হয় না। দরকার হয় একটি ফেক ফেসবুক আইডি [10] তারপর দেখুন কীভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা যায়। [11] এক কথায় ফেক ফেসবুক দিয়েই বিপ্লব চলে। [12] সেখানে কেন যে আপনারা জামাতকে টানেন বুঝতে পারি না। আপনারা এতই যখন জামাত বিরোধী তখন ভারতের জামাত শিবির বন্ধের জন্য মিটিং মিছিল করছেন না কেন? অথচ ভারতে RSS কুমির দিয়ে কী ধরতে চায় সেটা জিজ্ঞেস করে লজ্জা দেবেন না। তবে কুমির কিন্তু ভয়ঙ্কর এটা মাথায় রাখবেন।  


তবে পশ্চিমবঙ্গে 2016 সালে একজন যুক্তিবাদী ইসলাম নিয়ে সমালোচনা করাতে একজন ভয়ঙ্কর বিষধর ধর্মান্ধ সাপ 295এ কেস করেছিল। [13]  তবে ভারতে ফেক আইডি দিয়ে পোস্টের চেয়ে গো-মাংস অনেক বেশি বিপদজনক[14] আর বাংলাদেশে গরু না খাওয়ার জন্য কি হয় আর বললাম না। [15] তাই সব কিছুতে জামাত জামাত করে লাভ নেই। এমন করে জামাত এর নাম নেয়, মনে হয় জামাতের নাম না নিলে ভাত হজম হয় না। এই কথাটা বাংলাদেশের এক সিপিবি নেতা বলেছিলেন, তার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না।

আরেক মৌলবাদী আওমলীগ সরকার বলছেন এখনও অনেক লাশ পাওয়া যায়নি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর যত হামলা হয়।¹⁶ তার জন্য দোষ তো ধর্মের, তার থেকেও দোষ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হয়ে জন্ম নেওয়া। আমি তো বলবো বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উচিত মুসলিম হয়ে যাওয়া।


তারা সংখ্যালঘুদের দেখলে তাদের কথা শুনলে মুমিনদের ধর্মীয় অনুভূতিতে যখন তখন আঘাত আসে। এমন কি বিবর্তনবাদ নিয়ে ছাত্রদের লেকচার দিলে মহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর ছুরি হামলা"[17] এতো শান্তির ধর্ম যে বিবর্তনবাদ এদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে। [18] তাহলে বলতে পারতাম জামাত ও RSS এক মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ কিন্তু কিছুতেই এক করতে পারি না। এবং করাটা হবে চরম মূর্খতা, তার কারণ দুইজন ভিন্ন বিচার রাখে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা এতটাই ভালো আছে যে সবাই দলে দলে ইসলামের ছায়াতলে আসছে। এবং এতটাই শান্তির ধর্ম গ্রহণ না করলে হিন্দুদের যত্ন সহকারে খৎনার সহী কাজ করছে মুমিনরা [19] তাই গল্প বাদ দিন, বাস্তবতা দেখুন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন সাধারণ ঘটনা বর্তমানে....! তার জন্য জামাত হেফাজত লাগে না। আসলে এই উপমহাদেশের মুসলিমরা আজও অশিক্ষিত ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মান্ধ তারপর হিন্দু আর শিখ এদের আচরণ বলে এদের অবস্থান কি? আর মজার বিষয় ভারতীয় ধর্মগুলি প্রশ্ন ও তর্ক করতে কিছুটা সমর্থন করে। সে খানে আব্রাহামিক ধর্মে সংশয়বাদেরও স্থান নেই। 


চাইলে আরও তথ্য দিতে পারতাম। কিন্ত আপনারা কোনও তথ্য চেক করবেন না এটাই বাস্তবতা..

ছট পুজো বাস্তবতা -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 25, 2024 | ধর্ম | views:286 | likes:2 | share: 2 | comments:0

1. পুজোর পৌরাণিক বৈদিক শাস্ত্রীয় মত:

ছট পুজো এই উপমহাদেশের একটি পরিচিত একটি পুজোতে বললেই চলে। হিন্দু বর্ষপঞ্জীর কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে উদযাপিত একটি পুজো! যা বিহারে শুরু আমরা তাই জানি সূর্য্যোপাসনার এই অনুপম লৌকিক উৎসব পূর্ব ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ এবং নেপালের তরাই অঞ্চলে পালিত হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে এই পার্বণ প্রবাসী ভারতীয়দের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রচলিত হয়েছে। ছটে কোনও মূর্তি পূজা করা হয় না। কিন্ত এই পৌরাণিক হিন্দুধর্মের এই পুজোর কোনো শাস্ত্রীয় প্রমাণ আমি পাইনি...

রামায়ণে উল্লেখ থাকা মতে, রামের কুলদেবতা সূর্য্যের জন্য রাম এবং সীতা এই পূজা করেছিলেন। মহাভারতে উল্লেখ থাকা মতে, দ্রৌপদী ধম্য ঋষির উপদেশ মতে সূর্য্যকে আরাধনা করে অক্ষয় পাত্র লাভ করেছিলেন। সঙ্গে মহাবীর কর্ণের কোমর পর্যন্ত জলে নেমে সূর্য্যের উপাসনা করা উল্লেখ আছে। তবে আমরা যখন মহাভারত রামায়ণ পড়ি তখন এই ছট পুজোর নিয়ম আলাদা” তার কারণ এই পুজো শুধুমাত্র ক্ষত্রিয়দের ছিল। শূদ্র বৈশ্য ব্রাহ্মণদের ও নয়। তবে এই পুজো পৌরাণিক নয়। বৈদিক যেহেতু মূর্তি পুজো নেই। ঋগ্বেদের শ্লোকসমূহে সূর্য্যবন্দনার স্পষ্ট নিদর্শন আছে। তবে যজ্ঞ ও আহুতি দিয়ে, কিন্ত এখানে কোনো যজ্ঞ নেই। এক কথায় ভিন্ন সব কিছুই। বৈদিক ব্রাহ্মণ্য ধর্ম মতে এই পুজোর এমন রুপ পাওয়া যায়নি। যা বর্তমানে পুজার রুপ! তবে বেদ আরণ্যক ব্রাহ্মণ গ্রন্থে কোথাও এই পুজোর তথ্য নেই। 

2 ||ঐতিহাসিক ও যুক্তির দিক)

এই পুজোর কোনো যুক্তি নেই আছে শুধুই জল দূষণ। এবং পরিবেশের ক্ষতি, আপনি হয় জানেন বিগত বছর ধরে রবীন্দ্র সরোবরের ঘটনা যা হাইকোর্টেও বেশ চলছিল। জল দূষণ নিয়ে। পৌরাণিক বৈদিক তথ্য এই পুজোর সঠিক কোনো অস্তিত্ব নেই। আর থাকবেও না যখন আমরা ঐতিহাসিক তথ্য দেখব এই ছট পুজোর কোনো অস্তিত্ব নেই। বিহারের পুরাতন নাম মগধ পাটালিপুত্র যা বৌদ্ধদের ইতিহাস দখল করে আছে। আর ছট পুজোতে স্তুপ এর ব্যবহার থাকে যা পুজো হয়। আমরা যারা বৈদিক ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ও জৈন বৌদ্ধ আজিকাদের নিয়ে পড়াশোনা করি। তারা সবাই জানে জৈন বৌদ্ধদের কোনো না কোনও উৎসব রীতি ইতিহাস দখল করা ব্রাহ্মণদের।

আর বলে রাখি এই পুজো ব্রিটিশ সময়কালে শুরু বললেই চলে। আমরা যখন ইতিহাসের দিকে তাকাই তখন পৃথিবীর ভিন্ন স্থান থেকে বুদ্ধ অশোক সময়কালে অনেক কেউ এই ভারতে পড়াশোনা করতে আসত অনেক জ্ঞান তারা নিয়ে যেত গ্রীকের মেগাস্থিনিস চীনের হিউয়েন সাঙ ও আরবের আল বুরুনির মত ব্যক্তিরা ভারত ভ্রমণ করে তারা নিজেদের বইতে ভারত নিয়ে অনেক কথা লিখেছেন। যার মাধ্যমে আমরা সেই সময়কার ভারতের কথা জানতে পারি। তবে মেগাস্থিনিস, হিউয়েন সাঙ, আল বুরুনি কেউ এই ছট পুজোর কথা লেখেনি। এমন কি সংস্কৃত নামক বঙ্গদেশে মহা পন্ডিত বানভট্ট মহাশয় এই পুজো লেখেনি। না লিখেছে গৌড়ের রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি জয়দেব তার কর্তৃক সংস্কৃত ভাষায় রচিত গীতগোবিন্দম্ মহা কাব্য জয়দেব কে বাদ দিলেও বিষ্ণু বর্মা, এমন কি মাধবাচার্য আদি শঙ্করাচার্য কেউই এই পুজোর ইতিহাস লেখেনি। 

এই পুজো বৌদ্ধদের স্তুপ দখল করে চলছে রমরমিয়ে পুজো যা ব্রিটিশ সময় কাল থেকেই আমরা দেখি এর ইতিহাস যা। অনেকেই জানে না। জানার কথা নয়, প্রশ্ন করার মতো সবার জ্ঞান চাই যা আমাদের চোট থেকে ধার্মিক তৈরি করে প্রশ্ন করার যায়গা শেষ করা হয়। যেমন গীতা 4:40 তে বলা হয়েছেম ‘যারা সংশয়বাদী হবে শাস্ত্র ও গুরুর কথার উপর তারা দুঃখ ভোগ করবে।’ এর জন্য ব্রাহ্মণরা নতুন নতুন ভগবানের আমদানী করে থাকে যা তাদের জন্য সারা বছরের জীবিকা হয়ে ওঠে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের বললেও ভুল হবে। বৈশ্যদের জন্যও নানান বৈদিক পৌরাণিক পুজোর থেকে কেনা-বেচা চলে নানান সামগ্রী কিন্ত এতে আমাদের ভারত আরও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হচ্ছে। বুদ্ধ বা মহানবীর সব সময়ই শিক্ষার কথা বলছে এইসব কুসংস্কারের কথা নয়। তাদের অস্তিত্ব শেষ করতে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা এইসব পুজো শুরু করছে। আর ব্রাহ্মণ্যবাদীদের আরো শক্তিশালী করছে! মুসলিমরা তারাও ভয় পেয়েছে। বৌদ্ধ ও জৈনদের ঈশ্বরহীন ধর্ম কে। সেজন্য দেখি বৌদ্ধদের অনেক কিছুই মুসলিম ও ব্রাহ্মণরা মিলে ধ্বংস করেছে। মুসলিম শাসন কালে অনেক ব্রাহ্মণ শাস্ত্র রচনা বচন করা হয়েছে। তার তথ্য আমি আবার লিখব লাইভ আলোচনাও করবো ঐতিহাসিক তথ্য দিয়ে, তবে এই দখলের ইতিহাস আজকের নয়। নিজেকে প্রশ্ন করুক নিজেকে জানার চেষ্টা করুন, এটাই বুদ্ধ বলেছেন। আমাদের কুসংস্কার মুক্ত হতে হবে।

যুক্তিবাদীর চোখে গীতা শ্রীমদ্ভাগবত-পুরাণ সমীক্ষা -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 21, 2024 | যুক্তিবাদ | views:999 | likes:2 | share: 3 | comments:0

আমি দেখছি। অনেকেই গীতাকে একটি দর্শনের বই ধর্ম গ্রন্থ কেউবা সাম্প্রদায়িক বলে থাকে। কিন্ত ভাগবত পুরাণ ছাড়া গীতার মাহাত্ম্য বোঝা যায়। আমরা অনেকেই শ্রীমদ্ভাগবদগীতা পড়েছি! কিন্ত বিশেষ করে যখন যুক্তিবাদীরা গীতা পড়ে 9/32 নিয়ে, যখন সমালোচনা করে তখন শুধুমাত্র একটি শ্লোক ধরেই করে। কিন্ত কিছু মানুষ এখানেও গীতার শ্লোক নিয়ে অপপ্রচার করে। সেখানেই অন্যতম হলো গীতার 9/32 শ্লোক যেখানে নারীকে বেশ্যা পাপযোনি তার থেকে শূদ্র সন্তান বলা হয়। তখন সেটা আরো চরম ভাবে সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠে এখানেই কিছু মানুষের মিথ্যাচার চলে। তারা বলে গীতা বোঝা কি অত সহজ তাহলে গীতার 9/32 কি বোঝাতে চাইছে আমরা জানার চেষ্টা করবো এখন..

মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেহপি স্যুঃ পাপযোনয়ঃ |

স্ত্রিয়ো বৈশ্যাস্তথা শূদ্রাস্তেহপি যাস্তি পরাং গতিম্ || ৩২


এখানে মূলত যে সংস্কৃত শ্লোক গুলি গুরুত্বপূর্ণ 

পাপযোনয়ঃ = বলতে নীচকুল জাত [তাহলে জাতিভেদ ও চলে আসছে, তার সাথে নীচ কুলজাত এই নীচ কুল বলতে কি এর জন্য ¹(গীতা 1/41) পড়তে হবে সেখানে বলা আছে যে বর্ণসংঙ্কর উৎপাদন বৃদ্ধি হলে কুল ও কুলঘাতকেরা নরকগামী হয়। ] এবার [ বর্ণসংঙ্কর কি? তার জবাব হলো ¹(গীতা 1/40) সেটা হলো ! ব্রাহ্মণ কন্যা যদি ব্রাহ্মণকুল ছেড়ে অন্য বৈশ্য শূদ্র কুলে বিবাহ কে বর্ণসংঙ্কর বলে। তার সাথে সেই কুলস্ত্রীগণকে অসৎ চরিত্র ব্যভিচারী বলেছে আর যদি সেই ব্রাহ্মণ কন্যা শূদ্র পুরুষ কে বিবাহ করে তার দ্বারা যদি কোনো সন্তান কে জন্ম দেয়! সেখানেই গীতা বলছে অবাঞ্ছিত প্রজাতি, ভাবা যায়! আমরা গীতা থেকে এক নতুন বিবর্তনবাদ এর অনুসন্ধান পেলাম আর সেইসব প্রজাতির নাম জানলে অবাক হবেন? আইন শাস্ত্র যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি, সেই প্রজাতির নাম বলেছে।

যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতার ১ ম অধ্যায়ের ( ৯১-৯৫ )² নং শ্লোকে দেয়া আছে 

১ ) ব্রাহ্মণ পুত্ৰ + ব্রাহ্মণ কন্যা ---- উৎপন্ন সন্তান ব্রাহ্মণ

২ ) ব্রাহ্মণ পুত্র + ক্ষত্রিয় কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান মুৰ্দ্ধাবিষিক্ত ৩ ) ব্রাহ্মণ পুত্ৰ + বৈশ্য কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান অম্বষ্ঠ 

৪ ) ব্রাহ্মণ পুত্ৰ + শূদ্র কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান নিষাদ / পারশব 

১ ) ক্ষত্রিয় পুত্র + ব্রাহ্মণ কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান সূত 

২ ) ক্ষত্রিয় পুত্র + ক্ষত্রিয় কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান ক্ষত্রিয় 

৩ ) ক্ষত্রিয় পুত্র + বৈশ্য কন্যা ---- উৎপন্ন সন্তান মাহিষ্য

৪ ) ক্ষত্রিয় পুত্র + শূদ্র কন্যা ---- উৎপন্ন সন্তান উগ্র 

১ ) বৈশ্য পুত্র + ব্রাহ্মণ্ কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান বৈদেহক 

২ ) বৈশ্য পুত্ৰ + ক্ষত্রিয় কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান মাগধ 

৩ ) বৈশ্য পুত্র + বৈশ্য কন্যা -- উৎপন্ন সন্তান বৈশ্য 

৪ ) বৈশ্য পুত্র + শূদ্ৰ কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান করণ 

১ ) শূদ্ৰ পুত্ৰ + ব্রাহ্মণ কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান চন্ডাল 

২ ) শূদ্র পুত্র + শূদ্র কন্যা --- উৎপন্ন সন্তান শূদ্র

তাহলে আমরা পৃথিবীর সব থেকে আজব প্রজাতির নাম জানতে পারলাম। যে বর্ণসংঙ্কর ফলে উৎপাদন করা অবাঞ্ছিত প্রজাতি গুলি কি! এবং যত বেশি নিজ কুল ছেড়ে নীচু কুলে বিবাহ করবে ততবেশি পাপী হবে। এবং নরকে যাবে।¹

এবং এই প্রশ্ন ¹(গীতা 1/42) শেষ করে দেয়। সেখানে বলা [ যারা বংশের ঐতিহ্য নষ্ট করে এবং তার ফলে অবাঞ্ছিত সন্তানাদি সৃষ্টি করে, তাদের কুলর্মজনিত দোষে ফলে সর্বপ্রকার জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্প এবং বংশের কল্যাণ-ধর্ম উৎসন্নে যায় ] বুঝতে পারছেন কি বলতে চাইছে গীতা আরো পরিষ্কার এই 42 শ্লোক সংস্কৃত (জাতিধর্মাঃ কুলধর্মাশ্চ শাশ্বত) অনেক বলে না? {সনাতন) ধর্ম বলতে পুরাতন যা ছিল তাই থেকে যাবে! সেটা হলো জাতিভেদ সেখানে বলা হচ্ছে। জন্ম থেকে জাতি জন্ম থেকে বর্ণ জন্ম থেকে কর্ম আর এইসব যারা মানে না। তারা বিভিন্ন পাপযোনয়ঃ = জন্ম নিয়ে নীচকুল জাত হয়। 

বৈশ্যাস্তথা = বলতে অনেকেই ( বৈশ্য ) এর কথা বলে। কিন্ত আসলেই কি তাই? আসলে না। ¹(গীতা 9/32) সেখানে [ বৈশ্যা ] বলতে আসলে হলো { বেশ্যা } এর উত্তর আপনি ¹(গীতা 18/41) ¹(গীতা 18/44) দুটির সংস্কৃত শ্লোক চেক করতে পারেন।  যে সেখানে বৈশ্য শব্দ কেমন এসেছে। চাইলে আপনি শঙ্কর ভাষ্য চেক করতে পারেন। সেখানে বৈশ্য নয়। বেশ্যা আছে তাহলে পরিষ্কার হয়ে গেলাম বৈশ্য শব্দ নয় বেশ্যা আছে সেখানে।

শূদ্রাস্তেহপি = বলতে শূদ্র। সেখানে আর আলাদা আলাদা অনুবাদ আর দেখতে হবে না। সবাই এখানে আর গোজামিল করেনি। তাহলে পুরো শ্লোক এর অনুবাদ হবে এমন 


মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেহপি স্যুঃ পাপযোনয়ঃ |

স্ত্রিয়ো বৈশ্যাস্তথা শূদ্রাস্তেহপি যাস্তি পরাং গতিম্ || ৩২

হে পার্থ! যারা আমাকে বিশেষভাবে আশ্রয় করে, তারা স্ত্রী,বৈশ্যা,শূদ্র আদি নীচকুল জাত হলেও অবিলম্বে পরাগতি লাভ করবে।¹

তার মানে এখানে শ্রীকৃষ্ণ বলতে চাইছে! যে যদি কৃষ্ণকে না মানে তাহলে ( বেশ্যা শূদ্র আদি নীচ জাত ) থাকবে। আশ্রয় করলে মুক্তি পাবে। কিন্ত শ্রীমদ্ভাগবত-পুরাণ কি বলছে। ¹(গীতা 9/32) কে ধরে। 

³আভীরঙ্কা যবনাঃ খসাদয়ঃ |

যেহন্যে চ পাপ যদুপাশ্রয়াশ্রয়াঃ 

শুদ্ধ্যন্তি তস্মৈ প্রভবিষ্ণবে নমঃ || ২৷৪৷১৮

কিরাত, হূণ, আন্ধ্র, পুলিন্দ, পুল্কস, আভীর, কঙ্ক, যবন ও খস প্রভৃতি নীচজাতিগণ ও অন্যান্য মহাপাপাসক্ত ব্যক্তিগণ যাঁর (ভগবানের) আশ্রিত ভক্তগণের শরণ গ্রহণ করলেই পবিত্র হয়ে যায় সেই সর্বশক্তিমান ভগবানকে বাব বাব প্রমাণ। 

তাহলে এখানে যে সব নীচ জাতি সম্পর্কে জানতে পারলাম। সেখানে বলছে যে ভগবানের আশ্রিত ভক্তগণের শরণ গ্রহণ করলেই পবিত্র হয়ে যায়।

 না করলেই সে ডাইরেক্ট নীচ মহাপাপী। এবং এখানেই শেষ নয়। সেই ভগবান আবার সর্বশক্তিমান তাহলে কেন এই জাত ব্যবস্থা জন্ম থেকে? এবং কোনো শূদ্র জ্ঞানী হলেও সে তার শূদ্র ধর্ম ত্যাগ করতে মানা করেছে। ¹(গীতা 3/35) ¹(গীতা 18/47'48) এখন যদি শূদ্র অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হয়ে বিদ্যাণ হয়ে! ধর্মীয় শাস্ত্রের ভুল এর সমালোচনা করে আর সেই ইশ্বর কি বলেছে তা আপনার চিন্তার বাইরে। ¹(গীতা 4/40) কি বলেছে।

অজ্ঞশ্বাশ্রদ্দধানশ্ব সংশয়াত্মা বিনশ্যতি |

নায়ং লোকোহস্তি ন পরো ন সুখং সংশয়াত্ননঃ || ৪০

অজ্ঞ ও শাস্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ব্যক্তি কখনই ভগবদ্ভক্তি লাভ করতে পারে না। সন্দিগ্ধ চিত্ত ব্যক্তি ইহলোকে সুখভোগ করতে পারে না এবং পরোলোকেও সুখভোগ করতে পারে না।

তার মানে কেউ শাস্ত্রের ভুল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে পারবে না ! যদি করে তাহলে ইহলোকে এবং পরোলোকে ভয়ঙ্কর দুঃখে থাকবে কোনো সুখে থাকবে না। এর মধ্যে যদি সেই ব্যক্তি ইহলোকে ইশ্বরের নিন্দা করে তাহলে তো খবর আছে।

³কর্ণৌ পিধায় নিরয়াদ্যদকল্প ঈশে

ধর্মাবিতর্যসৃণিভিরস্যমানে |

ছিন্দ্যাৎ প্রসহ্য রুশতীমসতীং প্রভুশ্চে-

জ্জিহ্বামসূনপি ততো বিসৃজেৎ স ধর্মঃ || ৪৷৪৷১৭

যদি যথেচ্ছাচারী উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তিরা ধর্মরক্ষাকারী পূজনীয় প্রভুর নিন্দাবাদ করে তবে নিজের ক্ষমতায় তাদের দণ্ড দেওয়া সম্ভব না হলে কান বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যাবে, আর যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে বলপ্রয়োগে সেই অমঙ্গল - শব্দ - উচ্চারণকারীর জিহ্বাকে ছেদন করে ফেলবে। এই ধরনের পাপের প্রতিকারকল্পে নিজের প্রাণ পর্যন্ত পরিত্যাগ করবে — এই - ই ধৰ্ম 

হালে পরিষ্কার হলো গীতার ও ভাগবত পুরাণ এর অনুসন্ধান  গীতার একটি শ্লোক ¹(9/32) এর মানে কত বড়ো  এখন কি বলছেন।  সেই সর্বশক্তিমান ইশ্বরের নিন্দা করলে ভক্তগণ আপনাকে জিহ্বাকে কেটে হত্যা করবে। তাহলে কেন স্ত্রী বেশ্যা শূদ্র ইশ্বরের দাসত্ব বহন করবে। এখানেই নিজেকে প্রশ্ন করুন। যে কোনটা ঠিক কোনটা ভুল। আসা করি জানার কোনো শেষ থাকলো না। শুধু নিজেই রেফারেন্স চেক করে নেবেন বই থেকে....

রেফারেন্স :

1) শ্রীমদ্ভাগবদীতা যথাযথ- শ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী / ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট 

2) যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতার- সুমিতা বসু ন্যায়তীর্থ / কলকাতা সংস্কৃত পুস্তক ভাণ্ডার ২০০৭

3) শ্রীমদ্ভাগবত-মহাপুরাণ- গীতাপ্রেস, গোরক্ষপুর

ভারতীয় আস্তিক্যবাদ ও বস্তুবাদ (নাস্তিক্যবাদ) -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 21, 2024 | নাস্তিকতা | views:733 | likes:2 | share: 2 | comments:0

ভূমিকা: আপনাকে মনে রাখতে হবে। এই লেখা" ভারতীয় বস্তুগত সংস্কৃতি তাই এই লেখার সাথে' বর্তমান ভাষা সাহিত্য মিল কম। নাস্তিক শব্দ মানে ! বেদ বিরোধী ভারতীয় দর্শন মতে, এই নাস্তিক শব্দ বাংলাতে বলে = অনীশ্বরবাদী ইংলিশে Atheist বলা হয়। আমরা সবাই কম বেশি জানি। আর ভারতে কিছু নাস্তিকও নাস্তিকতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত পড়ালেখার অভাবের কারণে এই ভুলটি বলে থাকেন। ভারতবর্ষে উদ্ভূত দর্শনসমূহকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয় আস্তিক ও নাস্তিক। যে দর্শন বেদকে প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকার করে তা আস্তিক। সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা ও বেদান্ত এই ছয়টি আস্তিক দর্শন এবং এগুলিকেই একত্রে বলা হয় ষড়দর্শন।

 

আর চার্বাক, বৌদ্ধ ও জৈন দর্শন বেদে বিশ্বাসী নয় বলে এগুলি নাস্তিক দর্শন হিসেবে পরিচিত। উলে­খ্য যে, আস্তিক-নাস্তিকের ক্ষেত্রে ঈশ্বরে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনো কারণ নয়, যেমন ষড়দর্শনের মধ্যে সাংখ্য ও মীমাংসা জগতের স্রষ্টারূপে ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, অথচ উভয়ই বেদের প্রামাণ্য স্বীকার করে। বৈশেষিক দর্শনেও সরাসরি ঈশ্বরের কথা নেই। সাংখ্য ও যোগ জগতের স্রষ্টা হিসেবে পুরুষ ও প্রকৃতিকে স্বীকার করলেও যোগ ঈশ্বরের স্বতন্ত্র সত্তায় বিশ্বাসী। ন্যায় আত্মা ও ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়েও জগতের স্বতন্ত্র সত্তাকে স্বীকার করে এবং বেদান্ত ঈশ্বর (সগুণ ব্রহ্ম) তথা ব্রহ্মে (নির্গুণ) বিশ্বাসী; বেদান্তমতে ব্রহ্মই একমাত্র সত্য, আর সব মিথ্যা। ফলে দেখা যায় যে, একই উৎস থেকে জন্ম হলেও আস্তিক দর্শনগুলির মধ্যে কোনো কোনো বিষয়ে অমিল রয়েছে এবং জগৎ ও জীবন সম্পর্কে সেগুলি ভিন্ন ভিন্ন মতামত পোষণ করে।

 

চার্বাক দর্শন নাস্তিক দর্শন জড়বাদী। চার্বাক বা নাস্তিক দর্শন যে অতি প্রাচীন। প্রাচীন বৌদ্ধ গ্রন্থ ও সাহিত্যে,মহাভারতে এই মতের উল্লেখ পাওয়া যায়। জড়বাদী দর্শন ঘোরতর বেদ-বিরোধী এবং বেদ নিন্দুক তাই [১] মনুস্মৃতি তে ঋষি মনু বলেছেন "নাস্তিকো বেদনিন্দুকঃ"-অর্থাৎ যে বেদ নিন্দা করে (অপমান, ত্যাগ করে অথবা বিরূদ্ধাচরণ করে তাহলে কাকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করো )। কেউ যদি চেতন-সত্ত্বা কে অস্বীকার করে জড়বাদী হয়, তা তার বুদ্ধি জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা।

 

চার্বাক মতে, পাপ নেই, পুণ্য নেই। পাপ-পুন্যের কর্মফল ভোগও নেই। অতিপ্রাকৃত কিছুই নেই। ঐহিক ইন্দ্রিয় সুখই একমাত্র সুখ। দেহের মৃত্যুর পর আর কিছুই থাকে না। ইন্দ্রিয়লিপ্সু সাধারণ মানুষের কাছে চার্বাক নিতি খুবই হৃদয়গ্রাহী বা মনোরম, সহজ কথায় বেদ, উপনিষদ, ব্রাহ্মনগ্রন্থ, আয়ুর্বেদ..ভারতীয় দর্শনের মূল চিন্তাভাবনা থেকে চার্বাক, নাস্তিকতা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন। এই দর্শনের কথা হল-কামের (ইন্দ্রিয়-সুখ) চরিতার্থই মানুষের জীবনের চরম লক্ষ্য বা পরমপুরুষার্থ যা অন্যান্য দর্শন ও বৈদিক শাস্ত্রে ত্রিবিধ দোষ থেকে মুক্তির উপায় বা মোক্ষ প্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে। এই দর্শন বলে-যতদিন বাঁচবে ভোগ-সুখে বেঁচে থাক, প্রয়োজন হলে ঋণ করেও ঘি খাও। জীবনে খাও-দাও ফূর্ত্তি কর, কেননা আগামীকালই তোমার মৃত্যু হতে পারে। ভবিষ্যতের না-পাওয়া সুখের মিথ্যা ছলনায় বর্ত্তমানকে ত্যাগ করো না। বাকি কিছু বৈদিক মান্যতা গ্রহণ করে তাঁরা এটা মানে সুখই স্বর্গ, দুঃখই নরক কিন্তু সুখের পরিভাষা তাঁদের আলাদা।

 

এই মতে দেহাতিরিক্ত আত্মা নেই, দেহের সুখই আত্মার সুখ। কোন কারণেই নিজেকে ইহলৌকিক সুখ থেকে বঞ্চিত করো না। সাধারণ লোকের কাছে এই ধরনের কতা শ্রুতিমধুর বা চারুবাক্ বলে এই দর্শনের নাম "চার্বাক" হয়েছে। তবে অনেক পন্ডিতের মতভেদ আছে "চার্বাক" নামের উৎপত্তি বিষয়ে।

 

যেমনঃ "চর্ব"-ধাতুর অর্থ হল "খাওয়া দাওয়া করা বা চর্বণ করা"। এই দর্শনের খাওয়া দাওয়াকে, ইন্দ্রিয়-সুখকে, জীবনের পরমপুরুষার্থ বা কাম্যবস্তুরূপে মনে করে বলে এর নামকরণ "চার্বাক" হয়েছে। চার্বাকের একটি নীতিবাক্য হল "যাবজ্জীবেৎ সুখং জীবেৎ ঋনং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ"। আবার অনেকের মতে এই দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা দেবগুরু বৃহস্পতি। চারু শব্দের একটা অর্থও বৃহস্পতি। তাহলে "চারুর্ বাক্" অর্থাৎ "বৃহস্পতির কথা"। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে এই দর্শন অনুসরণ করে অসুরকুল যাতে সমূলে ধ্বংস হয় তার আয়োজন। এই দর্শনের বিভিন্ন সম্প্রদায় আছে যথাঃ বৈতন্ডিক, ধূর্ত, সুশিক্ষিত।

 

এই জ্ঞানতত্ত্বের সার কথা হলঃ (ক) প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ [প্রত্যক্ষমেকৈব্-Perception is the only source of Knowledge], চার্বাকের এই মত মানলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। দৈনন্দিন জীবে ধূম দেখে বহ্নির অনুমান না করলে চলে না। লোকযাত্রা নির্বাহের জন্য তাই প্রত্যক্ষ-অতিরিক্ত অনুমানকেও স্বীকার করতে হয়। (খ) অনুমান প্রমাণ নয়, (গ) আগম বা শব্দ প্রমাণ নয়, (ঘ) বেদবাক্য, শ্রুতিবাক্য প্রভৃতি নির্ভরযোগ্য় নয় কোন বিজ্ঞানীর শ্রুতি বাক্য বা অনুমান তাঁর মান্যতাদেয়। প্রত্যক্ষের অর্থ প্রথমত অনুভব {ইন্দ্রিয়-অভিজ্ঞতা, ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বিষয়ের সন্নিকর্ষ(যোগ) জনিত অনুভব}, দ্বিতীয় প্রত্যক্ষ অপরোক্ষ অনুভব [টেবিল দেখে টেবিলের যে জ্ঞান তা অন্য কোন জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে না],তৃতীয় প্রত্যক্ষ সম্যক অনুভব [সম্যক অর্থে সংশয়শূন্য ও বিপর্যয়শূন্য। অনিশ্চিত জ্ঞান হচ্ছে সংশয়। যেমন- ঐ বস্তুটি মূর্ত্তি, না মানুষ? মিথ্যা জ্ঞানকে বলে "বিপর্যয়"-আকাশে দুটি চাঁদের জ্ঞান]। প্রত্যক্ষ দ্বিবিধ-বাহ্যপ্রত্যক্ষ [চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক-এই পাঁচটি বাহ্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে বাইরের জগতের যে সাক্ষাৎ] ও মানসপ্রত্যক্ষ [মনের সাহায্যে সুখ, দুঃখ প্রভৃতি মানসিক অবস্থার সাক্ষাৎ]।

 

ন্যায় দর্শন বা বৈশেষিক দর্শনের সমস্ত প্রামাণ কে চার্বাক দর্শন গ্রহন করে না, বৈদিক দর্শন শাস্ত্রে "প্রত্যক্ষ" শব্দটি-কে যেমন যথার্ত জ্ঞান লাভের উপায় অর্থে ব্যবহার করা হয় তেমনি আবার 'যথার্থজ্ঞান' অর্থেরও ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ "প্রত্যক্ষ" শব্দটি একই সঙ্গে "প্রমাণ" এবং "প্রমা" অর্থে ব্যবহার করা হয়।

 

চার্বাক মতে, প্রত্যক্ষ আবার সবিকল্প অথবা নির্বিকল্প হতে পারে[যেমন- আমি "একটা কিছু" দেখেছি, কিন্তু সেটা কি বস্তু, সে জ্ঞান একনও হয়নি]। যাই হোক অন্যান্য দর্শন শাস্ত্রে প্রত্যক্ষকে প্রমাণরূপে স্বীকার করলেও একমাত্র প্রমাণরূপে স্বীকার করেন না। চার্বাক মতে পরোক্ষ জ্ঞান অস্পষ্ট ও অযথার্থ, এই যুক্তি তে প্রত্যক্ষ জ্ঞানকেও অযথার্থ বলতে হয়, কেননা প্রত্যক্ষজ্ঞানও পরোক্ষ। প্রত্যক্ষ জ্ঞান ইন্দ্রিয়-নির্ভর, তাই তা পরোক্ষ তা অযথার্থই।

 

আবার দেখুন নাস্তিক চার্বাক মতে "সকল ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষ জ্ঞান যথার্থ"-সকল ক্ষেত্রেই বলতে বর্তমান,অতীত ও ভবিষ্যতের প্রত্যক্ষ-জ্ঞান বোঝায়, যা প্রত্য়ক্ষের দ্বারা যাচাই করা যায় না। তাহলে মানতে হয় যে, চার্বাকরা প্রত্যক্ষ ছাড়াও অনুমানকে প্রমাণরূপে স্বীকার করেছেন। চার্বাক মতে, 'অনুমান ও শব্দ" প্রমাণ নয়, যেখানে ঋষি বাক্যও বৈদিক সংস্কৃতিতে শব্দ প্রমাণ মানা হয়। চার্বাক মতে অনুমান ও শব্দ-প্রমাণ অনেক সময় ভ্রান্ত জ্ঞান দেয়। একই যুক্তিতে প্রত্যক্ষেও প্রমাণরূপে প্রহণ করা যায় না, কেননা প্রত্যক্ষজ্ঞানও অনেক সময় ভ্রান্ত হয়। রুজ্জুতে সর্পভ্রম হয়, শুক্তিতে (মুক্তো) রজত (রৌপ)-ভ্রম হয়। চার্বাক মতে অনুমান প্রমাণ নয়, কেননা অনুমানের দ্বারা "প্রমা" অর্থাৎ নিঃসন্দিগ্ধ জ্ঞানলাভ হয় না। ধূম দেখে বহ্নির যে জ্ঞান তা অনুমানলব্ধ জ্ঞান। এ জ্ঞান প্রত্যক্ষজ্ঞানের মতে কখনই নিঃসন্দগ্ধ হতে পারে না। অনুমান ব্যাপ্তিজ্ঞানের ওপর নির্বর করে। ব্যপ্তি হল হেতু ও সাধ্যের মধ্যে নিয়ত সহচর-সম্বন্ধ। দূরের পাহাড়ে ধূম দেখে যখন "সেখানে আগুন আছে" বহা হয়, তখন তা হল অনুমান। এখানে অনুমান প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপঃ

 

ঐ প্রর্বতটি ধূমযুক্ত যে যে বস্তু ধূমযুক্ত সেই সেই বস্তু বহ্নিযুক্ত পর্বতটি বহ্নিযুক্ত।

 

প্রতিটি অনুমানের ক্ষেত্রে তিনটি পদার্থ থাকে-পক্ষ, হেতু ও সাধ্য (যা অনুমিত হয় তা সাধ্য)। এখানে 'বহ্নি" হচ্ছে সাধ্য, কেননা বহ্নি অনুমিত হয়েছে। যার সম্বন্ধে অনুমিত হয় তা পক্ষ। এখানে "পর্বত" সম্বন্ধে অনুমিত হয়েছে। তাই পর্বত হচ্ছে "পক্ষ"। যার সাহায্যে বা য়ার ওপর নির্বর করে অনুমিত হয় তা হেতু। এখানে ধূম হচ্ছে "হেতু", কেননা ধূম-প্রত্যক্ষের ওপর নির্ভর করে পর্বতে বহ্নি অনুমিত হয়েছে।হেতু ও সাধ্যের নিয়ত সহচর-সম্বন্ধ হল ব্যপ্তি। হেতু ও সাধ্যের 'নিয়ত সম্বন্ধ" বলতে বোঝায়- যেখানে হেতু সেকানে সাধ্য এবং এমন কোন ক্ষেত্রে নেই যে, হেতু আছে কিন্তু সাধ্য নেই। উল্লিখিত উদাহরণে ধূম (হেতু) ও বহ্নি (সাধ্য) মধ্যে নিয়ত সাহচর্য বা ব্যপ্তি-সম্বন্ধ আছে। যেখানে ধূম আছে সেখানে বহ্নি আছে এবং এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেকানে ধূম আছে কিন্তু বহ্নি (আগুন) নেই। 

 

নাস্তিক দর্শনগুলি ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না; সেগুলি অনাত্মবাদী ও জড়বাদী। চার্বাকদের মতে প্রত্যক্ষই জ্ঞানলাভের একমাত্র উপায় এবং যেহেতু ঈশ্বর প্রত্যক্ষযোগ্য নন, সেহেতু তাঁর কোনো অস্তিত্ব নেই। বৌদ্ধদর্শনের আলোচ্য বিষয় মানবজীবন; মানুষের দুঃখমোচনই এ দর্শনের একমাত্র লক্ষ্য। বৌদ্ধমতে জগতের সবকিছু ক্ষণস্থায়ী, পরিবর্তনই জগতের একমাত্র সত্য; যেহেতু কোনো কিছুই শাশ্বত নয়, সেহেতু নিত্য আত্মা বলতেও কিছু থাকতে পারে না। জৈনরা দ্বৈতবাদে বিশ্বাসী। এ দর্শনে দ্রব্যসমূহকে ‘অস্তিকায়’ ও ‘নাস্তিকায়’ নামে দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। যার বিস্তৃতি ও কায় (দেহ) আছে তা অস্তিকায়, যথা জীব ও অজীব (জড়) এবং যার বিস্তৃতি ও কায় নেই তা নাস্তিকায়, যথা কাল (time)। বঙ্গদেশে উপরিউক্ত দর্শনসমূহের প্রত্যেকটিরই কম-বেশি চর্চা হয়েছে এবং এখনও গুরুপরম্পরা ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে হচ্ছে; তবে ন্যায়, বিশেষত নব্যন্যায়ের চর্চার জন্য এক সময় এদেশ সমগ্র ভারতে বিখ্যাত ছিল।

 

নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস নয় বরং অবিশ্বাস এবং যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বাস নয় বরং বিশ্বাসের অনুপস্থিতিই এখানে মুখ্য। ইংরেজি ‘এইথিজম’(Atheism) শব্দের অর্থ হল নাস্তিক্য বা নিরীশ্বরবাদ। এইথিজম শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে গ্রিক ‘এথোস’ (ἄθεος) শব্দটি থেকে। শব্দটি সেই সকল মানুষকে নির্দেশ করে যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করে এবং প্রচলিত ধর্মগুলোর প্রতি অন্ধবিশ্বাস কে যুক্তি দ্বারা ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করে। দিনদিন মুক্ত চিন্তা, সংশয়বাদী চিন্তাধারা এবং ধর্মসমূহের সমালোচনা বৃদ্ধির সাথে সাথে নাস্তিক্যবাদেরও প্রসার ঘটছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম কিছু মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে স্বীকৃতি দেয়। বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয় এবং ১১.৯% মানুষ কোন ধর্মেই বিশ্বাস করে না। জাপানের ৬৪% থেকে ৬৫% নাস্তিক অথবা ধর্মে অবিশ্বাসী। রাশিয়াতে এই সংখ্যা প্রায় ৪৮% এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ ৬% (ইতালী) থেকে শুরু করে ৮৫% (সুইডেন) পর্যন্ত। পশ্চিমের দেশগুলোতে নাস্তিকদের সাধারণ ভাবে ধর্মহীন বা পরলৌকিক বিষয় সমূহে অবিশ্বাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের মত যেসব ধর্মে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয় না, সেসব ধর্মালম্বীদেরকেও নাস্তিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিছু নাস্তিক ব্যক্তিগত ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা, হিন্দু ধর্মের দর্শন, যুক্তিবাদ, মানবতাবাদ এবং প্রকৃতিবাদে বিশ্বাস করে। নাস্তিকরা কোন বিশেষ মতাদর্শের অনুসারী নয় এবং তারা সকলে বিশেষ কোন আচার অনুষ্ঠানও পালন করে না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত ভাবে যে কেউ, যে কোন মতাদর্শে সমর্থক হতে পারে,নাস্তিকদের মিল শুধুমাত্র এক জায়গাতেই, আর তা হল ঈশ্বরের অস্তিত্ব কে অবিশ্বাস করা।

 

ইংরেজিতে Believe, Trust, Faith এই তিনটি শব্দের অর্থ আগে জেনে নেয়া যাক।

 Believe (অনুমান, বিশ্বাস, বিশেষভাবে প্রমাণ ছাড়াই মেনে নেয়া)

1. accept that (something) is true, especially without proof.

2. hold (something) as an opinion; think.

যেমন, ভুতে বিশ্বাস করা। এলিয়েনে বিশ্বাস করা। অথবা, বিশ্বাস করা যে, অতীতে আমাদের পুর্বপুরুষ স্বর্গ থেকে নেমে এসেছিল। যার সপক্ষে এই বিশ্বাসী মানুষটি কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারলেও তা তিনি বিশ্বাস করেন। 


Trust (আস্থা)

1. firm belief in the reliability, truth, or ability of someone or something.

কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা বা ধারণার আলোকে কোন বিষয় সম্পর্কে ধারণা করা। যেমন আমি আমার অমুক বন্ধু সম্পর্কে আস্থাশীল যে, সে টাকা ধার নিলে আমাকে ফেরত দেবে। বা ধরুন, অমুক পত্রিকাটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ছাপে বলে আপনি মনে করেন। কারণ, অমুক পত্রিকাটি কয়েকবছর ধরে পড়ার কারণে পত্রিকাটির প্রতি আপনার আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখানে, আপনার এই আস্থার পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে আপনার পুর্ব অভিজ্ঞতা।

 

তথ্যসূত্র 

1 || মনুস্মৃতি 2/11

2 || চার্বাক দর্শন- হেমন্ত গঙ্গোপাধ্যায়

3 || লোকায়ত দর্শন- দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়

4 || সত্যার্থ প্রকাশ- দয়ানন্দ সরস্বতী

5 || ভারতীয় ধর্মের ইতিহাস- নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য

6 || Sutta Nipata - Khuddaka Nikaya

7 || Materialism in Indian Thought - K.K. MITTAL

ভারতীয় ইতিহাসের আরব্যকরণ এবং রাজনীতি -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 20, 2024 | রাজনীতি | views:485 | likes:3 | share: 2 | comments:0

একটি মিথ্যা ও ভ্রান্ত ইতিহাস বর্তমানের social media তে দেখা যায়। [1] ভারতকে স্বাধীন করতে যদি দশজন হিন্দু প্রাণ দিয়ে থাকে তাহলে ৯০ জন মু সলমান প্রাণ দিয়েছিলো। এই ইতিহাস নাকি বিজেপি আরএসএস মুছে ফেলেছে! অথচ মুসলিম লীগের অন্যতম লিডার, সাংবাদিক, লেখক আবুল মনসুর আহমদ তার বিখ্যাত বই [ ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ ] বইতে লিখেছেন, [2] মুসলমানরা ভারতের স্বাধীনতা চায়নি। তাদের মূল আগ্রহ ছিলো তুর্কী খিলাফত নিয়ে। সেই খিলাফত ও তার খলিফাকে রক্ষার জন্যই তারা মহাত্মা গান্ধির সমর্থন পাওয়ার আশ্বাসে অসহোযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলো। পরে খিলাফত বিলুপ্ত হয়ে গেলে সেই ভাবে মুসলিমদের আর আগ্রহ দেখা যায়নি ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে...।

আবুল মনসুর আহমদ আত্মসমালোচনা করে এই স্বীকারোক্তি করেছিলেন যে, মুসলিম লীগের একজনও তারা ভারতের স্বাধীনতা চায়নি! আজকের বুর্জোয়া কমিউনিস্টরাই ‘ওহাবী আন্দোলনের’ নাম দিয়েছিলো ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’! তীতুমীরের মত একটা ইসলামিক মৌলবাদী কে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত করতে চেয়েছে। কিন্ত কাল মার্ক্স তার বই - [3] [ MARX NOTES ON INDIAN HISTORY] তে লিখেছেন -Also, formidable disturbance at Barasat, near Calcutta, where bloody fight broke out between Moslem fanatics under Titu Mir and Hindus. British regiment put the rioters down (p.129) এর পরেও আজকের বুর্জোয়া রা কাল মার্ক্সকে চাড্ডি বলতে দুই পা পিছু হবে না।

হাজি শরীয়তুল্লাহ-তীতুমীর-দুদুমিয়ারা এই বঙ্গে হিন্দুয়ানী বিরোধী আন্দোলন করে বাঙালি মুসলমানকে তাদের সংস্কৃতি থেকে বিচ্যুত করে ফেলে। হিন্দুদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি করে নিজেদের স্বাতন্ত্র্যতা তৈরির আন্দোলন ছিলো ওহাবী আন্দোলন। আজকে যাদের সালাফি বা আহলে হাদিস হিসেবে চেনে তীতুমীর-শরীয়তুল্লাহ ছিলেন সেই মতবাদের আদিপুরুষ। তাদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামী বলে আমাদের সামনে পরিচিত করেছে এই বুর্জোয়া বামগুলি। তাদের ছানাপোনারা যখন আমাদের ইসলাম শেখাতে আসে, ইতিহাস শেখাতে আসে, বিজেপি আরএসএসের ইতিহাস বলে সত্যকে মুছে ফেলে তখন ভারতের হিন্দুদের কপালে দুঃখ আছে বলতেই হবে! 

এইসব বামদের কাছে প্রশ্ন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ কেন করেছিলেন যদি হিন্দু মুসলমান একই বৃন্তের দুটি কুসুম হয়ে থাকবে? নিরোদ সি চৌধুরী দেখিয়েছেন ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার ইতিহাস অনেক পুরোনো। সাতশো বছরের মুসলিম শাসনে স্থানীয় হিন্দুদের উপর মুসলিমদের একেশ্ববাদ, তাদের কালচার, শাসক হিসেবে, ধর্মগুরু হিসেবে যে আধিপত্য চলেছে সেখানে কি করে সুসম্পর্ক তৈরি হবে? যে মুসলমানরা মনে করত ইংরেজ তাদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে সেই ক্ষমতা নিজের হাতে শাসক হিসেবে বুঝে পাওয়াই লক্ষ্য সেই জনগোষ্ঠি কি করে হিন্দুদের ভাই মনে করবে? এরা তো হিন্দুদের প্রজাই মনে করবে। হিন্দু কমিউনিস্টদের মুখে ঝামা ঘষে আবুল মনসুর আহমদ লিখেছেন।

[5] মুসলমানরা নিজেদের জন্য পদ পদবী পাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলো। বেঙ্গল প্যাক্ট করতে তাদের আগ্রহ ছিলো বিপুল কারণ এখানে রাজনীতি ও সরকারী চাকরিতে লোভনীয় কোঠা সুবিধার চুক্তির কথা বলা হয়। সেই মোতাবেক দেশবন্ধু যখন কোলকাতার মেয়র নির্বাচিত হন তখন তার ডেপুটি করা হয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে। বেঙ্গল প্যাক্ট আদৌ হিন্দু মু সলমান ঐক্য নয় বরং বিবাদমান দুটি শত্রুর মাঝে শান্তি চুক্তি হচ্ছে বলেই মনে হয়। বস্তুত এরকম চুক্তি করে কখনোই ঐক্য করা সম্ভব নয়। বেঙ্গল প্যাক্টের চুক্তির এই ধারাগুলির দিকে একটু তাকান-

রাজনীতির পঞ্চাশ বছর - বই থেকে একটি পেজ পুরোটাই তুলে দিলাম। (p.162,163)

[6] কমরেড এম. এন. রায়ের প্রভাব জিন্না - সুভাষ মোলাকাত ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও তার একটা ছাপ আমার মনে স্থায়ী হইয়াছিল। আমি নয়া ধারায় চিন্তা করিতে শুরু করি। এই চিন্তায় কমরেড এম. এন. রায়ের সাহচর্য আমাকে অনেক দূর আগাইয়া নিয়া যায়। ১৯৩৮ সালে দিল্লী কংগ্রেস কাউন্সিল অধিবেশন উপলক্ষে কমরেড রায়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়। তার আগে কমরেড রায়ের প্রতি আমার ভক্তি - শ্রদ্ধা ছিল নিতান্ত রোমান্টিক। বিশ্ব কমিউনিয়মের অন্যতম নেতা স্ট্যালিনের সহকর্মী হিসাবে তিনি ছিলেন আমার ধরাছোঁয়ার বাইরে এক মনীষী। তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর আমার ভক্তির রোমান্টিক দিকটার অবসান হইলেও শ্রদ্ধা - ভক্তি এতটুকু কমে নাই। বরঞ্চ বাড়িয়াছে। বাস্তব রাজনীতিতে অবশ্য তাঁর মতবাদ ও উপদেশ নির্ভরযোগ্য মনে করিতাম না। সক্রিয় রাজনৈতিক ব্যাপারে তাঁর মত ধৈর্য ছিল না। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায় প্রথম দিকে তিনি আমাকে কৃষক - প্রজা পার্টি ভাংগিয়া সমস্ত কর্মীদের লইয়া সদলবলে কংগ্রেসে যোগ দিবার পরামর্শ দেন। তাঁর উপদেশ অগ্রাহ্য করার পর তিনি নিজেই কংগ্রেস ত্যাগ করেন এবং আমরা কৃষক - প্রজা কর্মীরা কংগ্রেসে না যাওয়ায় আমাদের প্রশংসা করেন। কলিকাতার মুসলিম ছাত্রদের উদ্যোগে আহুত মুসলিম ইনস্টিটিউটের এক সভায় তিনি কংগ্রেসকে ' নিমজ্জমান নৌকা ' বলেন এবং উহা হইতে সাঁতরাইয়া পার হওয়ার জন্য দেশ - প্রেমিকদের অনুরোধ করেন। কিন্তু আদর্শগত দিক হইতে রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্বন্ধে তাঁর বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত আমাকে বিস্মিত ও মোহিত করিয়াছিল। কংগ্রেস - মুসলিম লীগ - কমিউনিস্ট পার্টি কৃষক প্রজা পার্টির প্রভাবে ভারতের সকল গণ - প্রতিষ্ঠান যখন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ বলিতেছিলেন, তখন কমরেড রায় একাই ফ্যাসি - নাযিবাদকে মানবতার শত্রু ও সাম্রাজ্যবাদের চেয়ে বড় দুশমন প্রমাণ করেন এবং এই যুদ্ধকে গণযুদ্ধ বা ' পিপলস ওয়ার ' আখ্যা দেন। বিশ্বের একমাত্র সমাজবাদী রাষ্ট্র রাশিয়া হিটলারের সমর্থন করায় আমরা কমরেড রায়ের কথায় তখন বিশ্বাস করি নাই। তাঁর উপদেশ মানি নাই। পরে ১৯৪১ সালের জুন মাসে যখন হিটলার রাশিয়া আক্রমণ করেন এবং রাশিয়া জার্মানির বিরুদ্ধে রুখিয়া দাঁড়ায়, তখন কমরেড রায়ের কথার সত্যতায় এবং তাঁর জ্ঞানের গভীরতায় আমার শ্রদ্ধা আকাশচুনী হইয়া গেল। 

১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষক - প্রজা সমিতির সেক্রেটারি ও আইন পরিষদে কৃষক - প্রজা পার্টির লীডার বন্ধুবর শামসুদ্দিন পদত্যাগ করার পর হক মন্ত্রিসভার সহিত কৃষক - প্রজা সমিতির সম্পর্ক আগের চেয়েও তিক্ত হইয়া পড়িল। ফলে আমার পক্ষে হক সাহেবের সহিত ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও যাতায়াত রক্ষা করাও আর সম্ভব রহিল না। ১৯৩৯ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বর ইউরোপে মহাযুদ্ধ বাধিয়া গেল। ভারতবাসীর বিনা অনুমতিতে ভারতবর্ষকে ইউরোপীয় যুদ্ধে জড়ানোর প্রতিবাদে সাতটি কংগ্রেসী প্রদেশ হইতেই কংগ্রেসী মন্ত্রী - সভারা ২২ শে ডিসেম্বর পদত্যাগ করিলেন। ইতিপূর্বে ১৯৩৮ সালে মুসলিম লীগ পীরপুর রিপোর্ট নামে একটি রিপোর্টে কংগ্রেস মন্ত্রিসভা সমূহের মুসলমানদের উপর যুলুমের ফিরিস্তি প্রচার করিয়াছিল। কংগ্রেসী মন্ত্রীদের পদত্যাগকে মুসলিম লীগ কংগ্রেসী যুলুম হইতে মুসলমানদের নাজাত ঘৈাষণা করিয়া ২৩ শে ডিসেম্বর সারা ভারতে ‘ নাজাত দিবস ' পালন করে। এতে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে এবং হিন্দু - মুসলিম সম্পর্ক আরও তিক্ত হইয়া পড়ে। এমন সাম্প্রদায়িক তিক্ততার মধ্যে কৃষক - প্রজা সমিতির অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতিক রাজনীতি পরিচালন মুসলমান জনসাধারণ্যে খুবই কঠিন হইয়া পড়িল। তার উপর ১৯৪০ সালের ২৩ শে মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে ' পাকিস্তান প্রস্তাব ' গৃহীত হওয়ায় এবং স্বয়ং হক সাহেবই সেই প্রস্তাব উত্থাপন ও তার সমর্থনে মর্মস্পর্শী বক্তৃতা করায় বাংলার মুসলমানদের মধ্যেও পাকিস্তান দাবির ও মুসলিম লীগের শক্তি শতগুণে বাড়িয়া গেল। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সভা - সমিতি ও প্রচার - প্রচারণা অত্যন্ত কঠিন ও ব্যয়সাধ্য হইয়া পড়ায় কৃষক - প্রজা সমিতির মত গরিব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সভা সম্মিলন করা অসম্ভব হইয়া পড়িল। ফলে কৃষক - প্রজা সমিতির দাবিদাওয়া এবং হক মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে প্রচার - প্রচারণা কেবল মাত্র সমিতির দৈনিক মুখপত্র ’ ‘ কৃষকে’র পৃষ্ঠাতেই সীমাবদ্ধ হইল।

এখানেই শেষ নয়। ভারত বিভাজন যোগেন্দ্রনাথ ও ডঃ আম্বেদকর। বই (p.65) সেই সময় হিন্দুদের নিয়ে মুসলিম লীগ কি চিন্তা করছে ভালো করে পড়ুন। আজ অব্দি পাকিস্তানের রাজনীতিতে হিন্দুদের কোনো স্থান নেই। এর পরেও ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার চলে।

[7] “ পাকিস্তান হওয়ার বরং যুক্তি আছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বর্ণ হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানদের সংখ্যা - সাম্যের সুযোগ দেওয়া মোটেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়। আর অন্যান্য সংখ্যালঘুদের একত্রে চারটি আসনে সীমাবদ্ধ রাখাও আদৌ যুক্তিসংগত নয়। কারণ এঁদের ( হিন্দুদের ) মধ্যে একটি সম্প্রদায় হল তফসিলী যারা মুসলমানদের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের অনেক বেশি কাষ্ট হিন্দুদের সঙ্গে তুলনায় মুসলমানদের সমান দাবি যদি যুক্তিযুক্ত হয় তবে তফসিলীদের পক্ষে মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত প্রতিনিধিত্বের অন্ততঃ ৫০ ভাগ দাবি করা তো আরও যুক্তিযুক্ত। ” 

[8] শুধু ভারত নয় সমগ্র পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ সেদিন ডঃ আম্বেদকরকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাধুবাদ জানাতে পারেনি লীগ, মিঃ জিন্নাহ্ এবং তাদের বন্ধু মিঃ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল। মিঃ জিন্নাহ্ বলেছিলেন, ' আমরা পাকিস্তানের দাবি থেকে এক ইঞ্চিও সরছি না। ' শুধু তা - ই নয়, ঐ সময়ে এক ব্যক্তিগত আলোচনা প্রসঙ্গে আকালি নেতা সর্দার বলদেব সিংহকে সঙ্গে পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মিঃ জিন্নাহ্। তাঁকে বলেছিলেন: “বলদেব সিং, এই দেশলাই বাক্সটি দেখছেন তো! এই আকারের পাকিস্তানও যদি আমাকে দেওয়া হয়, আমি তা সানন্দে স্বীকার করে নেব। কিন্তু আমি আপনার সহায়তা - প্রার্থী। আপনি যদি শিখদের মুসলিম লীগের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজী করাতে পারেন তাহলে আমরা এমন এক গৌরবজনক পাকিস্তান পাব যার দেউড়ি খাস দিল্লীতে যদি নাও হয় অন্ততঃ দিল্লীর কাছাকাছি হবে। ”  শিখরা সেদিন মিঃ জিন্নাহ্র প্রস্তাব ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখান করেছিলেন তা ব্যাখা করার প্রয়োজন নেই। মিঃ জিন্নাহ্ যতদিন কংগ্রেসে ছিলেন ততদিন ধর্ম - বর্ণ - নির্বিশেষে সকল ভারতবাসীর নেতার আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু যেদিন থেকে ইসলাম ভিত্তিক মুসলিম লীগে যোগদান করলেন যেদিন থেকে তাঁর চিন্তা - চেতনা ও নেতৃত্বের পরিধি সঙ্কুচিত হয়ে গেল। তিনি হলেন কেবল মাত্র লীগপন্থী মুসলমানদের নেতা। (p.66,67)

ভারত ভাগ ছিল একপক্ষ হিন্দুরা যতোটা ভারত ভাগের পক্ষে ছিল। তার থেকেও বেশি ছিল। সেই সময়ের মুসলিম সমাজ তারা গণতান্ত্রিক নয়। মনে মনে ইসলামিক রাষ্ট্রের কল্পনাই করেছিল। সেই বিষয় আর তথ্য প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বর্তমানে সেই দেশে দলিত দের অবস্থা দেখছেন। আর তথ্য দরকার হলে ডঃ আম্বেদকর পাকিস্তান নিয়ে বইটা পড়তে পারেন। সেখানে ডঃ আম্বেদকর লিখেছেন- 

[9] What a Hindu is to a Muslim! To the Muslims a Hindu is a Kaffir. A Kaffir is not worthy of respect. He is low - born and without status. That is why a country which is ruled by a Kaffir is Dar - ul - Harb to a Musalman. Given this, no further evidence seems to be necessary to prove that the Muslims will not obey a Hindu government. The basic feelings of deference and sympathy, which predispose persons to obey the authority of government, do not simply exist. (Pakistan Or The Partition Of India) 

এবং এটা শেষ নয়। ডঃ আম্বেদকর তার বিভিন্ন বইতে লিখেছেন। যে আমি যখন ভারতের দলিত ও অছুত মাহার সমাজ কে এমন একটি ধম্ম কথা বলেছি। তখন মূলনিবাসী মুসলিমরা এর বিরোধ করেছে। তারা বলেছে। আমরা ইসলাম ত্যাগ কে করে অন্য কোনো মতবাদ কে সমর্থন করতে পারবো না। আপনি আমাদের কাছে জীবন চাইলে দিতে পারি। কিন্ত ধর্ম ছাড়তে পারবো না। যতই আমরা লাঞ্ছিত হই না কেন। [ তারপর আমরা জানি ডঃ আম্বেদকর ইতিহাসে সব থেকে বড়ো ধর্মান্তরিত সভা করে। ডঃ আম্বেদকর বৌদ্ধ  ধম্মের এক নতুন শাখা করে তার নাম নববৌদ্ধ যেখানে সবার সমান অধিকার আছে। তাই বলে এই লেখাতে আমি বৌদ্ধ ধম্ম সমর্থন করি না। এবং সংবিধানের সময়ও এটা দেখলো ভারতের মুসলিম সমাজ কতটা কুসংস্কার তথা ধর্মান্ধ।  ডঃ আম্বেদকর লিখেছেন- ভারতের ব্রাহ্মণ সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অত্যাচার হাজার বছরের তার পরেও মুসলিম সমাজ শরিয়ার মতো আঘাতমূলক আইনের চিন্তা করে। যতটা না মনুস্মৃতি আমাদের বঞ্চিত করেছে। তেমনি শরিয়া আইন ও মুসলিমদের আমাদের থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ডঃ আম্বেদকর আর লিখেছেন। ভারতের মুসলিমরা কোনোদিন ভারত কে ভালো বাসতে পারে না। তার কারণ ইসলাম এর অধিক দেয় না। ভারতের মূলনিবাসী ধর্মের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত তাহলেই ভারতের দলিতরা ব্রাহ্মণ্যবাদ থেকে বিচ্যুত হবে। (Pakistan Or The Partition Of India )

ইতিহাস কোনোদিন শেষ হবে না। ভারতের হিন্দুরা দেখেছেন তারা কি ভাবে বারবার আক্রান্ত হয়েছে। আর Rss এখানেই সেই সময়ের ইতিহাস কে  ব্যবহার করে। নিজেদের অস্তিত্ব শক্ত করেছে। সেই সময়ের ভুল গুলি আজকের Rss ফায়দা দিচ্ছে। আপনারা যতবেশি অসাম্প্রদায়িকতার নামে ইতিহাস কে আলু কে ভাগ করবেন।  Rss সেই আলু দিয়ে ইতিহাসের তরবারি করবে। আমরাই এক ভাবে ভুল ভাবে Rss কে শক্তিশালী করেছে। ভারতে যেমন ব্রাহ্মণ্যবাদের ফলে মানুষ সাম্প্রদায়িক ও অর্থনৈতিক ভাবে আক্রান্ত তেমনি ইসলামের জন্য বারবার মানুষ আক্রান্ত আর আপনাদের নীরবতা Rss কে শক্ত করে দেয়। মুসলিমদের হাতে অনার কিলিং হলে আপনারা চুপ থাকেন।  আর উচ্ছ বর্ণ হিন্দুদের হাতে দলিত মরলে আপনারা মিছিল করেন। দিনের পর দিন একটি ধর্মীয় সমাজ ভুলের উপর ভুল করলে আপনারা চুপ থাকেন। এখনো চুপ থাকেন। একটি ঘটনা আরেকটি ঘটনা দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করেন। যে কাজ Rss এর সেই কাজ আপনারা করে চলেছেন।  ইতিহাস কে আর কত বিকৃত করবেন।  সময় এসেছে সত্য ইতিহাসের মাধ্যমে ব্রাহ্মণ্যবাদ ও আরব্য সাম্রাজ্যবাদ কে দমানোর....

তথ্যসূত্র 

1 || আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর - আবুল মনসুর আহমদ

2 || MARX NOTES ON INDIAN HISTORY

3 || ভারত বিভাজন যোগেন্দ্রনাথ ও ডঃ আম্বেদকর - শ্রীবিপদভঞ্জন বিশ্বাস 

4 || Pakistan or The Partition Of India - B.R Ambedkar 

ডিভোর্স ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি -
সৌরাষ্ট্র দাশ
Nov. 19, 2024 | সামাজিক ইস্যু | views:1019 | likes:2 | share: 2 | comments:0

(প্রথমেই বলতে চাই আমার এই লেখা বিবাহ-বিচ্ছেদ এর পক্ষেও নয়, বিপক্ষেও নয়। এই লেখার মাধ্যমে এটাই বোঝার চেষ্টা করবো যে Divorce-এর আইনি পদ্ধতি এবং ডিভোর্স পদ্ধতি নিয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করেছি।  এই লেখার মাধ্যমে কোনো ধর্ম-কে অসম্মান করা আমার উদ্দেশ্য নয়। লেখাটি সম্পূর্ণ তথ্য অনলাইন আইনগত ওয়েবসাইট তথা সংবাদ পত্রিকা ও YouTube থেকে প্রাপ্ত।)


বিবাহ-বিচ্ছেদ যে'কোনো দম্পতির জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনাগুলির মধ্যে একটি। এর সাথে যোগ করার জন্য, বিবাহবিচ্ছেদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে এটি ভারতে দীর্ঘস্থায়ী এবং ব্যয়বহুল ব্যাপার হতে পারে। এমনকি যে দম্পতিরা পারস্পরিকভাবে বিবাহ-বিচ্ছেদে সম্মত হন, তাদের অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে আদালত তাদের আবেদন বিবেচনা করার আগে তারা এক বছরের জন্য আলাদা ছিল। এই বিষয় নিশ্চয়ই আপনারা অবগত।

ভারতে, বেশিরভাগ ব্যক্তিগত বিষয়গুলির মতো, বিবাহবিচ্ছেদের নিয়মগুলি ধর্মের সাথে যুক্ত। হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ এবং জৈনদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ হিন্দু বিবাহ আইন, 1955 দ্বারা, মুসলমানদের মুসলিম বিবাহ আইন, 1939 দ্বারা, পার্সি বিবাহ এবং বিবাহ-বিচ্ছেদ আইন, 1936 দ্বারা এবং খ্রিস্টানদের ভারতীয় বিবাহ-বিচ্ছেদ আইন, 1869 দ্বারা পরিচালিত হয়। সমস্ত নাগরিক এবং আন্তঃ-সম্প্রদায়িক বিবাহ বিশেষ বিবাহ আইন, 1956 দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বিবাহবিচ্ছেদ আইন কিছু শর্তের সাথে কাজ করে এবং সমস্ত পরিস্থিতিতে নয়। [1]


একজন পত্নী স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ করার আগে অন্য পত্নীকে বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য আইনি নোটিশ দিতে শুরু করতে পারে। বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদনের ধরন রয়েছে এবং আপনি এতদ্বারা, ভারতে কীভাবে স্ত্রীর কাছ থেকে বিবাহবিচ্ছেদ পাবেন তার পদ্ধতিগুলি বুঝতে পারবেন। ভারতে বিবাহ-বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া, ভারতে বিবাহ-বিচ্ছেদের নিয়ম এবং ভারতে বিবাহ-বিচ্ছেদের আইনগুলি একটু জটিল। আপনি প্রয়োজন হলে উকিল বা আইন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন। 


Divorce পিটিশনের ধরন

একটি দম্পতি পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ পেতে পারে, অথবা স্বামী/স্ত্রী উভয়ের সম্মতি ছাড়াই বিবাহবিচ্ছেদের জন্য ফাইল করতে পারে।


পারস্পরিক সম্মতিতে Divorce: [2]

যখন স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েই বিবাহ-বিচ্ছেদে সম্মত হন, তখন আদালত পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ বিবেচনা করবে। আবেদনটি গ্রহণ করার জন্য, তবে, দম্পতিকে এক বা দুই বছরের বেশি সময় ধরে আলাদা থাকতে হবে (প্রাসঙ্গিক আইন অনুসারে) এবং তারা প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন যে তারা একসাথে থাকতে পারেনি। প্রায়ই, এমনকি যখন স্বামী বা স্ত্রী উভয়েই অনিচ্ছুক হন, তবুও তারা এই ধরনের বিবাহ-বিচ্ছেদে সম্মত হন কারণ এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিবাহ-বিচ্ছেদের মতো আঘাতমূলক নয়। শিশুদের হেফাজত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং সম্পত্তির অধিকারের মতো বিষয়গুলি পারস্পরিকভাবে সম্মত হতে পারে।

How Does Mutual Divorce Work? [3]

তিনটি দিক আছে যেগুলো নিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হয়। একটি হল ভরণপোষণ বা রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা। আইন অনুসারে, সমর্থনের সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ সীমা নেই। এটি যে কোনও চিত্র বা কোনও চিত্র হতে পারে। দ্বিতীয় বিবেচ্য বিষয় হল সন্তানের হেফাজত। এটি অবশ্যই পক্ষগুলির মধ্যে কাজ করা উচিত, কারণ এটি অবশ্যম্ভাবীভাবে পারস্পরিক সম্মতি ছাড়াই বিবাহ-বিচ্ছেদে সর্বাধিক সময়ের প্রয়োজন। পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ-বিচ্ছেদে সন্তানের হেফাজতও স্বামীদের বোঝাপড়ার উপর নির্ভর করে ভাগ বা যৌথ বা একচেটিয়া হতে পারে। তৃতীয়টি হল সম্পত্তি। স্বামী-স্ত্রীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কে সম্পত্তির কোন অংশ পাবে। এর মধ্যে স্থাবর এবং অস্থাবর উভয় সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ডানদিকে, সবকিছু ভাগ করা আবশ্যক। এটি ন্যায্য হওয়ার জন্য এটি প্রয়োজনীয় নয়, যতক্ষণ না এটি উভয় পক্ষের দ্বারা সম্মত হয়।


ধারা কী বলে?

আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে! পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের সময়কাল 6 থেকে 18 মাসের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, আদালত পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ-বিচ্ছেদ শীঘ্রই শেষ করতে পছন্দ করে, বরং পরে। হিন্দু বিবাহ আইন, 1955 এর 13 বি এবং বিশেষ বিবাহ আইন, 1954 এর ধারা 28 অনুসারে, বিবাহ-বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করার আগে দম্পতিকে কমপক্ষে এক বছরের জন্য আলাদাভাবে বসবাস করতে হবে। বিবাহ-বিচ্ছেদ আইন, 1869-এর 10এ ধারায় অবশ্য দম্পতিকে কমপক্ষে দুই বছরের জন্য আলাদা থাকতে হবে। মনে রাখবেন যে আলাদাভাবে বসবাস করার অর্থ বিভিন্ন স্থানে বসবাস করা আবশ্যক নয়, দম্পতি শুধুমাত্র এই সময়ের মধ্যে স্বামী এবং স্ত্রী হিসাবে বসবাস করছেন না যে প্রদান করতে হবে।

মুম্বাই [4] এবং কলকাতা [5] পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ কীভাবে করা যায় তা জানুন।


পারস্পরিক সম্মতি ছাড়া বিবাহ বিচ্ছেদ:

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে যার ভিত্তিতে আবেদন করা যেতে পারে। এটা এমন নয় যে একজন স্বামী বা স্ত্রী কোনো কারণ ছাড়াই বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কারণগুলো নিম্নরূপ, যদিও কিছু

1. নিষ্ঠুরতা

নিষ্ঠুরতা শারীরিক বা মানসিক নিষ্ঠুরতা হতে পারে। ভারতের হিন্দু বিবাহবিচ্ছেদ আইন অনুসারে, যদি একজন পত্নীর মনে যুক্তিসঙ্গত আশংকা থাকে যে অন্য পত্নীর আচরণ ক্ষতিকারক বা ক্ষতিকারক হতে পারে, তাহলে স্বামী/স্ত্রীর দ্বারা নিষ্ঠুরতার কারণে বিবাহবিচ্ছেদ পাওয়ার পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে৷

2. Adultery

ভারতে, একজন পুরুষ যে Adultery করে! (অর্থাৎ বিবাহের বাইরে সম্মতিক্রমে যৌন মিলন করেছে) তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগ আনা যেতে পারে না। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত যে ভারতে পরকীয়া অপরাধ নয়। [6] তবে স্ত্রী অবশ্যই দেওয়ানী প্রতিকার হিসেবে বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারে। অন্যদিকে, যদি একজন স্ত্রী Adultery করে, তবে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা যাবে না, এই আইন আগের থেকে ছিল। যেটা এখন দুইপক্ষ মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে।

3. পরিত্যাগ

একজন পত্নী যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই অন্যকে ত্যাগ করা (উদাহরণস্বরূপ নিষ্ঠুরতা) বিবাহ-বিচ্ছেদের একটি কারণ। তবে, যে পত্নী অপরকে পরিত্যাগ করবে তার মরুভূমিতে যেতে হবে এবং তার প্রমাণ থাকতে হবে। হিন্দু আইন অনুসারে, ত্যাগ কমপক্ষে দুই বছর স্থায়ী হওয়া উচিত ছিল। খ্রিস্টানরা অবশ্য শুধুমাত্র এই কারণে বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবে না।

4. রূপান্তর

একজন স্বামী/স্ত্রী অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হলে বিবাহ-বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। এই কারণে বিবাহ-বিচ্ছেদ দায়ের করার আগে কোন সময় অতিবাহিত করার প্রয়োজন হয় না। 

এই বিষয় পশ্চিমবঙ্গের গায়ক কবীর সুমনের ব্যক্তিগত জীবনের উপর নজর দিতে পারেন। তবে এই বার বার ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করা অপরাধ না হলেও শিক্ষিত তথা সভ্য সমাজের জন্য অসম্মান জনক" এবং এর ফলে যদি তাদের সন্তান থেকে তাকে তাহলে স্বামী/স্ত্রীর ভূমিকা কি? এটা নিয়েও প্রশ্ন হতে পারে। [7]

5. মানসিক ব্যাধি

যদি স্বামী/স্ত্রী মানসিক অসুস্থতার কারণে বিবাহে প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া যেতে পারে। মানসিক অসুস্থতা এতটাই বেড়ে যায় যে বিবাহিত জীবনের স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করা যায় না।

6. সংক্রামক রোগ

যদি পত্নী একটি সংক্রামক রোগে ভোগেন, যেমন এইচআইভি/এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া বা কুষ্ঠ রোগের একটি মারাত্মক এবং দুরারোগ্য রূপ, ভারতে হিন্দু বিবাহ-বিচ্ছেদ আইন বলে যে অন্য পক্ষ বিবাহবিচ্ছেদ পেতে পারে। স্বামীর জন্য কোনো নিয়ম নেই।

7. বিশ্বের ত্যাগ / বা সন্ন্যাস

যদি পত্নী তার বিবাহিত জীবন ত্যাগ করেন এবং সন্ন্যাস গ্রহণ করেন, তাহলে সংক্ষুব্ধ পত্নী বিবাহবিচ্ছেদ পেতে পারেন। 

8. মৃত্যুর অনুমান

যদি স্বামী/স্ত্রীকে কমপক্ষে সাত বছর ধরে জীবিত থাকার কথা শোনা না হয়, এমন ব্যক্তিদের দ্বারা যারা এই ধরনের পত্নীর সম্পর্কে শুনেছেন, যদি তিনি বা তিনি বেঁচে থাকেন, তাহলে যে পত্নী জীবিত আছেন তিনি একটি বিচারিক ডিক্রি পেতে পারেন। বিবাহ-বিচ্ছেদ

আপনি ইসলামে বিবাহবিচ্ছেদের ধরন [8] ভারতে বিবাহবিচ্ছেদের আইন, ভারতে বিবাহ-বিচ্ছেদের নিয়ম, ভারতে বিবাহ-বিচ্ছেদের নতুন নিয়ম [9] ভারতে মুসলিম বিবাহ আইন, [10] দিল্লি এবং কলকাতায় [11]  পারস্পরিক সম্মতি ছাড়া বিবাহ বিচ্ছেদ [12] এবং আরও অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারেন।

বিবাহবিচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি:

কিছু করার আগে, আপনার পত্নীকে বিবাহ-বিচ্ছেদের নোটিশ দিতে আপনার সচেতন হওয়া উচিত। এটি আবেগগুলিকে স্পষ্ট করতে এবং সম্পর্কটি বন্ধ করার বিষয়ে আপনার চিন্তাভাবনা শুরু করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম। বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য একটি আইনি নোটিশ অন্য পত্নীকে ভবিষ্যতের সম্পর্কের বিষয়ে স্পষ্টতা এনে দেবে যা আপনি রাখতে চান।


একজন পত্নী বিবাহের সম্পর্ককে কভার করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তার/তার অভিপ্রায় জানাতে অন্য পত্নীকে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য একটি আইনি নোটিশ পাঠাতে পারেন। এটি একটি আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ যা 'স্বামী এবং স্ত্রী' সংযোগ ভাঙার প্রথম পদক্ষেপ।

যে উপাদানগুলি ভরণপোষণের সময়কাল এবং পরিমাণকে প্রভাবিত করে:

একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, ভরণপোষণ, তার পরিমাণ এবং মেয়াদ, বিবাহের দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে। বিবাহের এক দশক পরে বিবাহবিচ্ছেদ স্বামী/স্ত্রীকে আজীবন ভরণপোষণের অধিকারী করে। অন্যান্য অপরিহার্য কারণ হল:


1. পত্নীর বয়স (অথবা যে ব্যক্তিকে ভরণপোষণ পাওয়া উচিত)

2. অর্থনৈতিক অবস্থা বা যে ব্যক্তিকে ভরণপোষণ প্রদান করতে হবে তার উপার্জন

3. উভয় পত্নীর স্বাস্থ্য (ব্যর্থ স্বাস্থ্য বা চিকিৎসার অবস্থা স্বামী/স্ত্রীর মধ্যে একজন যে ভরণপোষণ পেতে চলেছেন তারা তার পক্ষে কাজ করতে পারেন। তারা তাদের স্বাস্থ্যহীনতার ভিত্তিতে একটি বড় ভরণপোষণ দাবি করতে পারেন)।

4. যে পত্নী সন্তানের হেফাজতে রাখে সে হয় কম ভোক্তা প্রদান করবে বা শিশুটি নাবালক থাকাকালীন একটি বড় পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে।

সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয় কিভাবে নিষ্পত্তি করবেন?

আপনি বা আপনার পত্নী সম্পত্তির মালিক কিনা তা খুব কমই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন - বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন দায়ের করা হয়েছে তা নির্বিশেষে - আপনার সম্পত্তি দখল করার অধিকার রয়েছে। আপনি যদি বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন তবে মামলাটি আরও শক্তিশালী। যদিও সম্পত্তিটি বিবাহ-বিচ্ছেদের নিষ্পত্তিতে একজন বা অন্য পত্নীকে মঞ্জুর করা যেতে পারে, যতক্ষণ না এটি করা হয়, উভয় পত্নীর সম্পত্তিতে থাকার অধিকার রয়েছে।


সন্তানের হেফাজত সম্পর্কে কি?

অনেকে ধরে নেন যে মা সবসময় তার সন্তানদের হেফাজত পান। এই ক্ষেত্রে না হয়. যদিও আদালত সাধারণত পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে পিতামাতার সিদ্ধান্তে সম্মত হন, আদালত সন্তানের সর্বোত্তম স্বার্থের দিকে নজর দেবে। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, আদালত সন্তানের পিতা বা মাতা হওয়ার ক্ষমতা পরীক্ষা করবে, উদাহরণস্বরূপ। আপনি বিবেচনায় টাকা নিতে পারবেন না. সাধারণত, আদালত তাদের সন্তানদের হেফাজত করে অ-কর্মজীবী মায়েদের কাছে, তবে পিতারা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবেন বলে আশা করা হয়।


বিবাহবিচ্ছেদ পেতে কত খরচ হয়?

বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতের ফি কম, খরচ প্রধানত ফি আপনি আপনার আইনজীবী প্রদান! আদালতে হাজিরা এবং অন্য কোনো কাজ করার জন্য আইনজীবীদের ফি নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এটি কতটা নিবিড়ভাবে কাজ করে তার উপর নির্ভর করে, তাই এটির দাম কম হতে পারে দশ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত।


তথ্যসূত্রঃ 

1 || https://indiankanoon.org/search/?formInput=Marriage+and+Divorce

2 ||  https://youtu.be/Y6vIXZ-WpEs

3 || https://indiankanoon.org/search/?formInput=How+Does+Mutual+Divorce+Work%3F

4|| https://indiankanoon.org/search/?formInput=How+To+Get+A+Mutual+Consent+Divorce+In+Mumbai%3F

5 || https://indiankanoon.org/search/?formInput=How+To+Get+A+Mutual+Consent+Divorce+In+Kolkata+

6 || https://www.bbc.com/bengali/news-45667250

7 || https://bangla.asianetnews.com/west-bengal/how-many-times-kabir-suman-changed-religion-does-islam-accept-his-actions-r6h2ta

8 || https://www.legalserviceindia.com/article/l393-Divorce-under-Muslim-Law.html#:~:text=Under%20Muslim%20law%20the%20divorce,to%20the%20status%20of%20marriage.

9 || https://ca.practicallaw.thomsonreuters.com/6-581-5985?transitionType=Default&contextData=(sc.Default)#:~:text=The%20only%20requirement%20for%20divorce,a%20period%20of%20one%20year.

10 || https://indiankanoon.org/search/?formInput=Muslim+Marriage+Law+In+India%3A+Formalities%2C+Polygamy%2C+Divorce%2C+Remarriage

11 || https://lawrato.com/divorce-legal-advice/divorce-by-mutual-consent-in-kolkata-119765

12 || https://indiankanoon.org/search/?formInput=Divorce+Without+Mutual+Consent+In+Delhi

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86930